কাজের ফাঁকে হালকা ঘুম জরুরি, যা বলছে গবেষণা

কাজের ফাঁকে ঘুম
কাজের ফাঁকে ঘুম   © সংগৃহীত

দৈনিক কাজের চাপে ক্লান্তি ঢুকে পড়ে চোখে-পাঁপড়িতে। অফিসের ব্যস্ততায় সাধারণত ঘুমানোর সুযোগ থাকে না, তাই অনেকেই চোখে-মুখে পানির ছিটা দিয়ে বা চা-কফি খেয়ে কাজ চালান। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, কাজের মাঝের হালকা ঘুম মস্তিষ্ক ও শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে এবং কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়ায়।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কাজের মাঝে নেওয়া হালকা ঘুম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ঘুমের সময় কাজ-সংক্রান্ত স্বল্পমেয়াদি তথ্যগুলো আরও স্থায়ী ও শক্তিশালী স্মৃতিতে পরিণত হয়। এতে শেখার দক্ষতা যেমন বাড়ে, তেমনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও উন্নত হয়।

এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স’-এ। এতে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকেরাও অংশ নিয়েছিলেন। ২৫ জন অংশগ্রহণকারীর মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তারা এ ফলাফল প্রকাশ করেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সময় মস্তিষ্কের কর্টেক্স যা স্মৃতিচারণ ও শেখার সঙ্গে জড়িত বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। অংশগ্রহণকারীরা কিছু সময় ঘুমানোর পর দেখা যায়, তাদের মস্তিষ্কে তরঙ্গের মাত্রা বেড়েছে, যা সরাসরি কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।

গবেষকদের মতে, ঘুমের সময় প্রশিক্ষণকালীন সক্রিয় থাকা কর্টিকাল মস্তিষ্ক অঞ্চলে বেশি ছন্দময় কার্যকলাপ দেখা গেছে। এই অঞ্চলে মস্তিষ্কের ছন্দ বৃদ্ধির সঙ্গে ঘুমের পর কাজের উন্নতির সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে যখন অফিসে নতুন কিছু শেখা হয় সেই সময়ে হালকা ঘুমিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এতে কাজের কর্মদক্ষতা বাড়ে, শেখার ক্ষমতাও উন্নত হয়। ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে এবং ওই বিষয়ে ভাবতে থাকে। যা নতুন জিনিসকে আত্মস্থ করতে সাহায্য করে। 

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও মনোরোগ বিভাগের শিক্ষক ডানা মানোআচের মতে, ঘুমের সময় মস্তিষ্কের সর্বত্রই একটি বিশেষ ছন্দ তৈরি হয়। কিন্তু নতুন কিছু শেখার পর সেই অঞ্চলে ছন্দ বেড়ে যায়, যা সম্ভবত স্মৃতি স্থিতিশীল ও উন্নত করতে সাহায্য করে।

হিউস্টন মেথোডিস্ট হাসপাতাল এবং রাইস ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা ও চিকিত্সা সুবিধা সেন্টার ফর নিউরাল সিস্টেম রিস্টোরেশনের বৈজ্ঞানিক পরিচালক ভ্যালেন্টিন ড্রাগোই বলেছেন, ছয় মিনিটের ঘুমও উজ্জ্বীবিত করতে পারে এবং শেখার উন্নতি করতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ