ডায়াবেটিস থাকলেও খেতে পারেন এই ১০টি ফল
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ০৬:৩৯ PM , আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:০২ PM

গ্রীষ্মকালে রসালো ও সতেজ ফল খাওয়ার আগ্রহ বাড়ে সবারই। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের মাঝে প্রায়ই একধরনের ভীতি কাজ করে—ফল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে না তো? প্রকৃতপক্ষে, সব ধরনের ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয়। অনেক ফলেই প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও, তা পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে বরং উপকারই মেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিস রোগীরা কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) ও বেশি ফাইবারযুক্ত ফল বেছে নিলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নিই, ডায়াবেটিস রোগীরা কোন ফলগুলো নিরাপদভাবে খেতে পারেন:
জাম
মাত্র ২৫ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বিশিষ্ট এই গ্রীষ্মকালীন ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এতে থাকা ‘জাম্বোলিন’ নামক যৌগ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
পেয়ারা
কম ক্যালোরি ও ফাইবারসমৃদ্ধ পেয়ারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় এবং ভিটামিন সি দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পেঁপে
পেঁপে হজমে সহায়ক এবং এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। গ্লাইসেমিক স্কোরও অনেক কম।
তরমুজ
তরমুজে পানি ৯০ শতাংশের বেশি থাকায় হাইড্রেশনে ভালো কাজ করে। তবে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় অল্প পরিমাণে এবং বাদামের সঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
পীচ
ভিটামিন এ, সি ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ এই ফলটি হাইড্রেট করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে ক্যানজাত নয়, তাজা পীচ খাওয়াই ভালো।
আরও পড়ুন: যেসব কারণে রোজ সকালে ডিম খাওয়া উচিত
আরও যেসব ফল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ
আপেল (GI: ৩৭) – উচ্চ ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, নাশপাতি (GI: ৩৮) – পেট ভরায় এবং শর্করার ওঠানামা কমায়, লিচু (GI: ৫৫) – সীমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে, কমলা (GI: ৫৫) – কম গ্লাইসেমিক লোডের কারণে এটি তুলনামূলক নিরাপদ, মাল্টা (GI: প্রায় ৪০-৪৫) – প্রচুর ভিটামিন সি এবং কম গ্লাইসেমিক লোড।
ফল খাওয়ার কিছু সতর্কতা
প্রধান খাবারের সঙ্গে ফল নয়, বরং মাঝারি বেলার স্ন্যাক্স হিসেবে খাওয়াই উত্তম। ফলের জুস নয়, আস্ত ফল খান কারণ জুসের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি হয়। দিনে ৭৫ কিলোক্যালরি সমমূল্যের মিষ্টি ফল খেতে পারেন। যেমন: ২৫০ গ্রাম তরমুজ, ২৫০ গ্রাম পেঁপে, ১৩০ গ্রাম আম, ১১০ গ্রাম আপেল, ১০০ গ্রাম লিচু, ১৫০ গ্রাম নাশপাতি। কিডনির জটিলতা থাকলে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল (যেমন কলা, কমলা) খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ডায়াবেটিস মানেই সব ফল বাদ নয়। বরং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ফল বেছে নিয়ে পরিমাণ বুঝে খেলে তা শরীরের জন্য পুষ্টিকর হতে পারে। তাই নিজের ডায়েট পরিকল্পনায় ফল রাখুন, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলুন।