মরণব্যাধি ক্যান্সারের স্তর জানাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩৭ AM , আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩৬ PM
ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর রোগের ‘স্টেজ’ বা স্তর নির্ধারণ করা রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সারের স্তর জানার মাধ্যমে বোঝা যায় টিউমারের আকার, তা শরীরের কোথায় অবস্থান করছে এবং ছড়িয়ে পড়েছে কিনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর প্রায় ১.৩ কোটি মানুষ ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। (খবর এমএনটি)
ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, সঠিকভাবে ক্যান্সার স্টেজ নির্ধারণ করলে চিকিৎসা পরিকল্পনা আরও কার্যকর হয় এবং রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে। এছাড়াও এটি চিকিৎসকদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাছাই ও দীর্ঘমেয়াদী রোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করে।
আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি ব্যাখ্যা করেছে যে, ক্যান্সার স্টেজিং চিকিৎসার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সারের প্রাথমিক স্তর সার্জারি বা রেডিয়েশন থেরাপিতে ভালো সাড়া দিতে পারে, অন্যদিকে উন্নত স্তরগুলিতে কেমোথেরাপি, লক্ষ্যনির্ভর ওষুধ বা ইমিউনোথেরাপি ভালোভাবে কাজ করতে পারে।
আরও পড়ুন: পিএসসিতে নতুন তিন সদস্য নিয়োগ
কীভাবে স্তর নির্ধারণ করা হয়?
সারা বিশ্বে সবচেয়ে প্রচলিত ক্যান্সার স্টেজিং পদ্ধতি হলো টিএনএম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মূলত তিনটি দিক বিবেচনা করা হয়: মূল টিউমারের আকার ও বিস্তার, আশপাশের লিম্ফ নোডে ছড়িয়ে পড়া, শরীরের দূরবর্তী স্থানে ছড়িয়ে পড়া
এই তিনটি মানের ভিত্তিতে ক্যান্সারকে সাধারণত স্টেজ ০ থেকে স্টেজ ৪ পর্যন্ত শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
স্টেজ ০: এটি ক্যান্সারের প্রাথমিক ধাপ যেখানে কোষগুলো অস্বাভাবিক হলেও এখনো শরীরের অন্য কোথাও ছড়ায়নি। চিকিৎসায় সফলতার হার প্রায় ৯৯%, স্টেজ ১: টিউমার ছোট এবং ছড়ায়নি। সার্জারি বা রেডিয়েশনে ভালো ফল পাওয়া যায়, স্টেজ ২: টিউমার কিছুটা বড় এবং কাছাকাছি টিস্যুতে প্রবেশ করেছে, স্টেজ ৩: টিউমার বড় এবং কাছাকাছি লিম্ফ নোড বা টিস্যুতে ছড়িয়েছে। চিকিৎসা জটিল ও আগ্রাসী হতে পারে, স্টেজ ৪: ক্যান্সার শরীরের অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে (যেমন ফুসফুস, যকৃত)। বেঁচে থাকার হার সবচেয়ে কম, তবে লক্ষ্যভিত্তিক ওষুধ বা ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
স্টেজ কি বদলাতে পারে?
সাধারণভাবে, প্রাথমিক নির্ধারিত ক্যান্সার স্টেজ বদলায় না। তবে রোগ ফিরে এলে বা নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়লে চিকিৎসকরা পুনর্মূল্যায়ন করেন এবং অতিরিক্ত তথ্য যুক্ত করেন। এই নতুন তথ্য পূর্বের স্টেজকে বাতিল করে না, বরং আরও স্পষ্ট করে তোলে।
ক্যান্সার মানেই মৃত্যুদণ্ড নয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো ক্যান্সার শনাক্ত ও সঠিক স্টেজিংয়ের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই রোগ পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য। তাতে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তাই শরীরের অস্বাভাবিক পরিবর্তন বা উপসর্গ দেখলেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।