পে স্কেলের সুপারিশ নিয়ে আজ ফের পে কমিশনের বৈঠক, আলোচনায় যেসব বিষয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৬ PM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৩ PM
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নবম জাতীয় পে স্কেলের সুপারিশ নিয়ে আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ফের আলোচনায় বসছে পে কমিশন। বেলা ৩টায় সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। পে কমিশনের এক কর্মকর্তা আজ দুপুরে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগেও বেশ কয়েক ধাপে সভা করেছে কমিশন।
কমিশনের এক কর্মকর্তা না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আজ সচিবালয়ে পে কমিশনের সভা হবে। এতে পে স্কেলের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে। তবে চূড়ান্ত সুপারিশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কিনা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। অনেক বিষয়ে জটিলতা থাকায় আরও একাধিক সভার প্রয়োজন হতে পারে।
কমিশন সূত্রে খবর, অনলাইনে পাওয়া মতামত ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রস্তাবনা বিশ্লেষণের পরে সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসছে কমিশন। এই বৈঠকে সুপারিশ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আলোচনা হবে। তবে পে স্কেলের সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত থাকায় এক বৈঠকে সুপারিশ চূড়ান্ত করাটা কঠিন হবে।
জানা গেছে, নবম পে-স্কেল নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে জাতীয় বেতন কমিশন (পে-কমিশন)। তবে এখনো সম্পূর্ণ প্রতিবেদন লেখার কাজ করা যায়নি বলে জানিয়েছে পে-কমিশন। সোমবার কমিশনের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, কর্মচারীদের সাম্প্রতিক মহাসমাবেশ কিংবা বুধবার থেকে কঠোর কর্মসূচি—কোনো কিছুতেই বিচলিত নন তারা।
বাস্তবসম্মত একটি সুপারিশ প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিয়েছে কমিশন। এজন্য প্রতিটি সংস্থা, দপ্তর এবং সংগঠন থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাব গভীরভাবে পর্যালোচনা করে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ হতে আরও সময় লাগবে। কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কর্মচারীরা আন্দোলন করতে পারে। আন্দোলন ঠেকানো কিংবা আশ্বাস দেওয়া কমিশনের কাজ নয়। কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের সুপারিশ প্রণয়ন নিয়ে কাজ করছে।’
নবম পে-স্কেলের প্রতিবেদন জমা দিতে কতদিন সময় লাগতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কমিশনের রিপোর্ট প্রস্তুত হয়ে গেলে আপনারা (সাংবাদিক) কোনো না কোনোভাবে সবুজ সংকেত পেয়ে যাবেন। তখন কমিশনের চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।’
এদিকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও সম্প্রতি সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের দমন প্রক্রিয়া ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন পরবর্তী সরাকারি সিদ্ধান্তে একরকম ভীত পে স্কেলের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সেজন্য আপাতত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছেন না তারা। সরকারি সিদ্ধান্ত ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্যে কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছেন তারা।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা দাবি পেশ করব, তবে সব দাবি রাস্তায় আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হয় না। এক্ষেত্রে পে স্কেলের দাবিতে আমরা আলোচনার মাধ্যমে আদায় করতে চাইছি। পাশাপাশি সচিবালয়ের ভেতরে সম্প্রতি অপ্রীতিকর ঘটনায় বাইরের কর্মচারীরা সচিবালয়ের কর্মচারীদের ওপর ক্ষুব্ধ। সব বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন: দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে মেডিকেলে চান্স পেলেন ৪৪ শিক্ষার্থী
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা অর্থ উপদেষ্টা সালেহ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছি। উনার সঙ্গে দেখা করতে আমরা অপেক্ষা করছি। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আমরা দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ আলচনায় বসবো। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এদিকে সরকারি চাকরিজীবী বিধিমালা ও শৃঙ্খলা বহির্ভূত কোন কর্মসূচি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে ইচ্ছেমতো কর্মসূচি আমরা দিতে পারি না। আমরা চাকরির বিধিমালা ও শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কর্মসূচি দেবো। বিধিমালা বহির্ভূত কোন কর্মসূচি দেয়া হবে না।’
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের লক্ষ্যে গত জুলাই মাসে কমিশন গঠন করে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ওই কমিশনের ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কর্মচারীদের দাবি ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যেই নতুন পে স্কেলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে।