কমিশন ভিন্ন পথে হাঁটছে, পে স্কেল দেওয়ার নামে তালবাহানা করছে: ওয়ারেছ আলী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ PM
প্রজাতন্ত্রের ১৮ লাখ কর্মচারীর পক্ষ থেকে নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবি তুলে পে কমিশনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবী আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২০ সালে নবম পে স্কেল পাওয়ার কথা থাকলেও কেন ২০২৫ সালে এসে কর্মচারীদের মহাসমাবেশ ডাকতে হলো এবং কেন পে কমিশন সুপারিশ না দিয়ে ভিন্ন পথে হাঁটছে।
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে ‘সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের’ উদ্যোগে জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
ওয়ারেছ আলী বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা ন্যায্য অধিকার, পরিবারের ভরণপোষণ, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের চিকিৎসা, বাড়ি ভাড়া এবং সন্তানদের বড় করে তোলার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অত্যন্ত কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাই সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা বেতনে ১:৪ অনুপাতে ১২টি গ্রেডে নবম পে স্কেলের দাবি জানিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত সরকার তাদের আন্দোলন কর্মসূচি করতে দেয়নি। নেতৃবৃন্দকে যথাযোগ্য সম্মান তো দূরের কথা, বিভিন্ন সময়ে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ প্রশাসন ও এনএসআই দিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে দুই দফা মহাসমাবেশ ডাকলেও ‘ফ্যাসিস্ট সরকার’ আন্দোলন সফল হতে দেয়নি। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ন্যায্য দাবির কথা বলতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসমাবেশ, সারাদেশ থেকে আসছেন সরকারি চাকরিজীবীরা
বর্তমান সরকারকে বৈষম্যবিরোধী আখ্যা দিয়ে ওয়ারেছ আলী বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. ইউনুস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে যেমন দায়িত্ব পালন করছেন, তেমনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বও তার ওপর। ‘তিনি আমাদের পরিবারের অভিভাবক,’ উল্লেখ করে ওয়ারেছ বলেন, গরিব কর্মচারীদের দুঃখ–দুর্দশা বিবেচনায় তিনি পে কমিশন গঠন করেছেন।
তিনি জানান, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে কমিশনের সুপারিশ দেওয়ার জন্য লিখিত আবেদন জানানো হলেও কমিশন ভিন্ন পথে হাঁটছে। ‘কর্মচারীদের পে স্কেল যাতে না হয়, সেজন্য তারা পরিসংখ্যান মূল্যায়নের নামে জরিপে গেছে। তারা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলছে, সচিবদের সঙ্গে কথা বলছে। সচিবরা তো পে কমিশনের সদস্য নন তাহলে কেন তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে?’—প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ওয়ারেছ আলীর অভিযোগ, জরিপ ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার নামে পে কমিশন সময়ক্ষেপণ করছে। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আপনার এই পে কমিশন ভিন্ন পথে হাঁটছে। কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার নবম পে স্কেল দেওয়ার নামে তালবাহানা করছে।’
তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়ে বলেন, পে কমিশনের সুপারিশ ছাড়াই যেন ১৮ লাখ গরিব, অসহায়, খেটে খাওয়া কর্মচারীর জন্য নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থ উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পে কমিশন গঠনের পর আপনার সহমর্মিতা ছিল ১৮ লাখ কর্মচারীর পাশে। আপনি কার কথায় কনভার্ট হয়ে গেলেন? কার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের সঙ্গে তালবাহানা করছেন?’