আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন © সংগৃহীত
মাঠের ফুটবলে আর্জেন্টিনা এখন সাফল্যের মধ্যগগনে থাকলেও মাঠের বাইরের সময়টা মোটেও সুখকর যাচ্ছে না বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। গতকাল মঙ্গলবার আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সদর দপ্তরে হঠাৎ হানা দিয়েছে পুলিশ। মূলত কর ফাঁকির এক বিশাল তদন্তের অংশ হিসেবেই রাজধানী বুয়েনস এইরেসে অবস্থিত দেশের ফুটবলের এই সর্বোচ্চ সংস্থায় এই শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালানো হয়।
পুলিশের এই তল্লাশি অভিযান কেবল প্রধান কার্যালয়েই সীমাবদ্ধ ছিল না, তা ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণ এজেইজার জাতীয় দলের অনুশীলন কেন্দ্রেও—যেখানে নিয়মিত ঘাম ঝরান লিওনেল মেসিরা। এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ‘ট্যুরপ্রোডএন্টার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে। নিজেদের এএফএ-র ‘একচ্ছত্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক এজেন্ট’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তদন্তের তালিকায় রয়েছে ‘সুর ফিনানজাস’ নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানও, যাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫৫ কোটি ডলার কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে।
তবে শুরু থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এএফএ। সংস্থাটির দাবি, তারা কোনো অপরাধ করেনি, বরং তারা এক ‘নোংরা প্রচারণার’ শিকার। জাতীয় দলের প্রীতি ম্যাচ আয়োজন নিয়ে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে এই কলঙ্কজনক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে তাদের দাবি। এএফএ আরও জানিয়েছে যে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই-এর সরকারও এই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে।
তদন্ত ও অভিযানের আড়ালে অনেকে আবার ভিন্ন এক রাজনৈতিক লড়াইয়ের গন্ধও পাচ্ছেন। আর্জেন্টিনার বর্তমান প্রেসিডেন্ট মিলেই চান দেশের ফুটবল ক্লাবগুলোকে পাবলিকলি ট্রেডেড স্পোর্টস কোম্পানিতে রূপান্তর করতে। কিন্তু এএফএ-র বর্তমান নিয়মের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই আইনি পদক্ষেপ ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ওপর চাপ সৃষ্টির একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে বলেও ফুটবল বিশ্লেষকদের ধারণা।