কোচ পিটার বাটলার কি থাকছেন এশিয়ান কাপ পর্যন্ত?
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৩ PM , আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৫ PM
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইতিহাস বদলে দেওয়া কোচ পিটার বাটলারের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। যদিও ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তবু আগামী বছর মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান কাপে তিনি দায়িত্বে থাকবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন ইংলিশ এই কোচ।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাটলার বলেন, “আমি জানি না, পরবর্তী টুর্নামেন্টে আমি দায়িত্বে থাকব কি না। জানি না আমার ভবিষ্যৎ কী। আমি থাকি বা না থাকি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে ইতিহাস গড়ার জায়গায় পৌঁছে দেওয়া। সেটা আমরা পেরেছি, এটাই আমার তৃপ্তি। আমি মনে করি, বাংলাদেশের নারী ফুটবলের চিত্র বদলাতে কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পেরেছি।”
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) এলিট একাডেমির কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন পিটার বাটলার। এরপর ২০২৪ সালে নারীদের জাতীয় দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তার হাতে। সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন পথচলা।
এর আগে নারী দল কখনো এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে জয় পায়নি। কিন্তু বাটলারের অধীনে কৌশলগত পরিবর্তনের পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। বাহরাইন ও স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে দল। আর তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৭–০ গোলের বিশাল জয় ছিল বিস্ময়কর। এশিয়ান কাপে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ।
“তরুণ খেলোয়াড়েরা দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ তৈরি করে। এতে সবাইকে স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়। আমি সেটাই করেছিলাম—গোটা ব্যবস্থাটিকে নাড়িয়ে দিয়েছিলাম,”—বলেন বাটলার। তিনি আরও বলেন, “আমাদের খেলার ধরন অনেককে সত্যিই চমকে দিয়েছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে কারণ আমি আমার খেলোয়াড়দের ওপর বিশ্বাস রেখেছি।”
নারী দলের দায়িত্ব নেওয়ার শুরুতে শৃঙ্খলার অভাব দেখে হতবাক হন এই ইংলিশ কোচ। তার ভাষায়, “জাতীয় দলে যখন আমি আসি, কিছু খেলোয়াড় নিজেরাই নিজেদের দলে ঢুকিয়ে নিচ্ছিল। কোনো শৃঙ্খলা ছিল না। দুর্ভাগ্যবশত, শৃঙ্খলা ছাড়া কোনো দলের সফলতা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্বিত। তারা অনেক ত্যাগ করেছে। কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে এবং তার ফল পেয়েছে। সকালে ৫টায় ঘুম থেকে উঠে ৬টায় নিবিড় অনুশীলনে আসা—এটা সহজ ছিল না। কিন্তু ওইটিই ছিল পরিবর্তনের শুরু, যেখানে শৃঙ্খলাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা আগে দেখা যায়নি।”
তবে সবকিছুই যে মসৃণ ছিল—তা নয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ ১৮ জন খেলোয়াড়। তার বিরুদ্ধে ‘গালিগালাজ’, ‘বডি শেমিং’, ‘মানসিক নির্যাতন’-এর মতো গুরুতর অভিযোগ আনেন তারা। বিদ্রোহের অবসান ঘটলেও বিদ্রোহী পাঁচ খেলোয়াড়কে এখনো দলে ফেরাননি বাটলার।
এ নিয়ে তিনি বলেন, “কোনো কোচই এমন ভিত্তিহীন ও মিথ্যা অভিযোগ শুনতে চায় না। অভিযোগগুলো একঘেয়ে, ক্লান্তিকর হয়ে উঠেছিল। আমার কোনো ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য ছিল না। আমি যা করেছি, তা বাংলাদেশ নারী ফুটবলের উন্নতির জন্যই করেছি।”