কল্পনা থেকে লেখা ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা’, বাস্তবে ছিল না সুজাতা, মঈদুলরা

কল্পনা থেকে লেখা ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা’, বাস্তবে ছিল না সুজাতা, মঈদুলরা
কল্পনা থেকে লেখা ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা’, বাস্তবে ছিল না সুজাতা, মঈদুলরা  © সংগৃহীত

পাগলা গারদে নেই রমা রায়, নিখিলেশও প্যারিসে থাকেন না। কাগজের রিপোর্টার মঈদুল, গিটারিস্ট ডি সুজা কিংবা কবি কবি চেহারার অমল—এ গানের সাত চরিত্রই আসলে কাল্পনিক।

‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ গানটি ১৯৮৩ সালে প্রকাশিত হয়। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা ও সুপর্ণকান্ত ঘোষের সুরে এই গানে কন্ঠ দেন মান্না দে। চার দশক পেরিয়ে গেলেও সে গান আজও শ্রোতাদের মুখে মুখে।

কেউ যদি বলে, সে ডনাল্ড ট্রাম্প কিংবা সুনীল গাভাস্কার, তাহলে আমি কী করব? আমার কিছুই বলার নেই। এগুলো সব মিথ্যা কথা। গানের সব চরিত্রই কাল্পনিক—সুপর্ণকান্তি ঘোষ

বাঙালি শ্রোতার মনে যুগ যুগ ধরে যে গানের কথা আর সুরে মিশে এই সব চরিত্রেরা প্রাণবান হয়ে আছে—বাস্তবে তাদের কারোরই দেখা মিলবে না বলে জানিয়েছেন এ গানের সুরস্রষ্টা সুপর্ণকান্তি ঘোষ।

দুই বাংলার মানুষের মুখে মুখে এ গানের চরিত্র মঈদুল, সুজাতা, নিখিলেশ, ডি সুজা, রমা রায়, অমলকে যুগ যুগ ধরে শ্রোতারা বাস্তবে খুঁজে এসেছেন।

দেশের শ্রোতাদের কাছে কাগজের রিপোর্টার মঈদুল হিসেবে প্রয়াত ক্রীড়ালেখক ও সাংবাদিক নূর আহমেদ মঈদুলকে আলোচনায় তুলে আনা হয়েছে। তবে গানটির সুরস্রষ্টা সুপর্ণকান্তি ঘোষ বলছেন, শুধু মঈদুল নয়, গানের কোনও চরিত্রের সঙ্গেই বাস্তবের কারও মিল নেই।

একটি গণমাধ্যমে দেয়া আগের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কেউ যদি বলে, সে ডনাল্ড ট্রাম্প কিংবা সুনীল গাভাস্কার, তাহলে আমি কী করব? আমার কিছুই বলার নেই। এগুলো সব মিথ্যা কথা। গানের সব চরিত্রই কাল্পনিক।”

১৯৮৩ সালে গানটি লেখার আগে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বা সুরকার সুপর্ণকান্তি ঘোষের কেউ কফি হাউসে যাননি। শিল্পী মান্না দেও তার আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন, তিনিও গান প্রকাশের আগে কফি হাউসে কখনও আড্ডা দেননি।

তিনি আরও বলেন, “চল্লিশ বছর বাদেও গানটা এমন জনপ্রিয় যে, প্রতিদিন প্যারোডি হচ্ছে। কেউ বলছে, আমি সুজাতা, কেউ বলছে, আমি কফি হাউসের বেয়ারা! এই সমস্ত বলে বেড়াচ্ছে, আমি কী করব!”

গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা এই গানে ছয়টি চরিত্রের দেখা মেলে। তবে সাত নম্বর চরিত্রটির নাম জানা যায় না সেখানে।

কেউ নিজের নামের মিল পেলেই গানের এসব চরিত্রের সঙ্গে কফি হাউসের আড্ডার বন্ধুদের একজন হতে চান জানিয়ে সুপর্ণকান্তি বলছেন, “সুজাতা চ্যাটার্জি নামে আমার এক বন্ধু আছে; হাওড়ায় শিক্ষকতা করেন। তাই বলে কি গানটি তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে? নামের মিল থাকলেই নিজেকে চরিত্র হিসেবে মেলানো যাবে না। আর মেলাবেই কেন? গানের চরিত্রগুলোই তো কাল্পনিক।”

তবে গানের চরিত্রের সঙ্গে অনেকের জীবনের গল্প মিলে যায় বলেই শ্রোতারা বাস্তব জীবনে গানের চরিত্রগুলোকে খোঁজার চেষ্টা করেন বলে মনে করেন সুপর্ণকান্তি।

New Project - 2024-08-31T092226-572

মান্না দে’র সঙ্গে সুপর্ণকান্তি ঘোষ

উত্তর কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে কফি হাউসটি কলকাতার বুদ্ধিজীবী আর তরুণ সাংস্কৃতিক কর্মীদের আড্ডাস্থল হিসেবে পরিচিত বহু আগে থেকেই।

তবে ১৯৮৩ সালে গানটি লেখার আগে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার বা সুরকার সুপর্ণকান্তি ঘোষের কেউ কফি হাউসে যাননি। শিল্পী মান্না দেও তার আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন, তিনিও গান প্রকাশের আগে কফি হাউসে কখনও আড্ডা দেননি।

সুপর্ণকান্তি ঘোষ বলেন, “কফি হাউসে সরাসরি আড্ডা থেকে নয়, কল্পনা থেকে আমাদের বাসায় বসে গানের প্রথম স্তবক লিখেছিলেন গৌরী কাকা, গানের আইডিয়াটা ছিল আমার।”

তবে গান প্রকাশের পর কফি হাউসে গিয়েছিলেন সুপর্ণকান্তি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence