তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের
- হাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩০ AM , আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০১:১৫ PM
নবম গ্রেডে ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার অভিযোগে তিন দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন নামের প্ল্যাটফর্ম। এতে যোগ দিচ্ছেন বুয়েটসহ অন্যান্য প্রকৌশল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের শিক্ষার্থীরাও বিবৃতি দিয়েছেন।
কর্মসূচির প্রথম ধাপে আজ রবিবারসহ ২৫ ও ২৬ আগস্ট ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন প্লাটফর্মটির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিবুল হক লিপু। তিনি বলেছেন, দাবি মেনে নেওয়া না হলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে। আপাতত ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।
বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডিপ্লোমাধারীরা কোনও প্রকার বিসিএস পরীক্ষা না দিয়েই এবং যাদের বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা ‘স্নাতক’ নেই, তারাও শুধু পদোন্নতির মাধ্যমে বিসিএস ক্যাডার হয়ে যাচ্ছেন। গণপূর্ত, সড়ক ও জনপথ, রেলওয়ে, কারিগরি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরগুলোতে দশম গ্রেডের নন-ক্যাডার পোস্টে প্রবেশ করে ৫ বছর পর তারা বিসিএস ক্যাডার হয়ে যান।
তারা বলেন, বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্যের আরেকটি চিত্র হলো অবৈধ সিনিয়রিটি প্রদান। একই বছরে বিএসসি প্রকৌশলী আগে নিয়োগ পেলেও, যদি সেই বছরের শেষের দিকে কোনও ডিপ্লোমাধারী পদোন্নতি পায়, তবে পরবর্তী সব পদোন্নতির ক্ষেত্রে সেই ডিপ্লোমাধারীকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এটি সুস্পষ্ট বৈষম্য এবং বিএসসি প্রকৌশলীদের জুনিয়র বানিয়ে রাখার এক অন্যায় প্রচেষ্টা।
বিবৃতিতে বলা হয়, নবম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী নিয়োগের জন্য বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার চেয়ে জব সার্কুলার দেওয়া হলে, ডিপ্লোমাধারীরা রিট বা মামলা করে তা বন্ধ করে দেয়, যার ফলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ আটকে যায় এবং প্রতিষ্ঠানগুলো ডিপ্লোমাধারীদের ভারপ্রাপ্ত বা চলতি দায়িত্বে প্রমোশন দিতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন: ৬০ হাজার শিক্ষক পদ শূন্য, কীভাবে পূরণ করবে এনটিআরসিএ
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে
১. ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনও পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
২. টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়ের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
৩. ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নন অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
শিক্ষকদেরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। হাবিপ্রবির ইইই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেন, সহকারী অধ্যাপক সাজেদুর রহমান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. আলমগীর হোসাইন, এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. নাজমুল হুদাসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক সংহতি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন।