পবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের সংকট ২৩ বছরেও কাটেনি, শিক্ষার্থীরা হতাশ

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পার হলেও শারীরিক শিক্ষা বিভাগে এখনো রয়েছে চরম অব্যবস্থা ও দীর্ঘদিনের অবহেলার চিত্র। খেলাধুলা শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এই বিভাগের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সীমিত মনোযোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছে।

বর্তমানে বিভাগটিতে নেই কোনো স্থায়ী প্রশিক্ষক, পর্যাপ্ত খেলাধুলার সরঞ্জাম কিংবা নির্দিষ্ট অনুশীলন ক্ষেত্র। একমাত্র কেন্দ্রীয় মাঠে সব ধরনের খেলার আয়োজন করতে হয়। কিন্তু ওই মাঠটিও বছরের অধিকাংশ সময় অকার্যকর অবস্থায় থাকে—সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় পানি, নেই কোনো মানসম্মত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মাঠটি অসমান ও ঘাসে ভরা, পাশেই নেই ড্রেসিং রুম বা বিশ্রামের জায়গা, যা খেলোয়াড়দের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করে।

ইএসডিএম অনুষদের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দলের খেলোয়াড় রাকিবুল হাসান রাব্বি বলেন, ‘ফুটবল খেলি ঠিকই, কিন্তু পর্যাপ্ত অনুশীলনের সুযোগ নেই। মাঠের অবস্থাও ভালো নয়। আর একজন পেশাদার কোচ থাকলে আমাদের খেলার মান আরও ভালো হতো।’

নারী ক্রিকেট দলের সদস্য ও এনএফএস অনুষদের শিক্ষার্থী নুরুন নাহার এমি বলেন, ‘আমরা আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নারী ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশ নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা উপলব্ধি করেছি, আমাদের ঘাটতি কতটা। অনুশীলনের জন্য পিচ, মাঠ বা সরঞ্জাম—কিছুই আমাদের মতো করে নেই।’

আরও পড়ুন: কোন বাহুল্য ছাড়াই হচ্ছে এসএসসির ফল, সময় লাগছে দুই মাসেরও কম

শুধু মাঠ নয়, খেলার সরঞ্জামের অভাবও প্রকট। হকি, বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, টেবিল টেনিস বা ব্যাডমিন্টনের মতো খেলাগুলোর জন্য নেই কোনো নির্ধারিত জায়গা বা নিজস্ব কাঠামো। ব্যায়ামাগারে সীমিত সরঞ্জাম ব্যবহার করেই ব্যাডমিন্টন খেলতে হয়। অনেকে খোলা জায়গায় অস্থায়ীভাবে জাল বসিয়ে খেলেন, তবে সেটিও নির্ভর করে আবহাওয়া ও জায়গা পাওয়ার ওপর।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন হলেও তা সারা বছরের জন্য পরিকল্পিত হয় না। নেই কোনো রুটিনভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। প্রয়োজনীয় বাজেটও থাকে সীমিত। খেলোয়াড় নির্বাচন, অনুশীলন এবং পরবর্তী উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সবই চলে খণ্ডকালীনভাবে, তা-ও নির্দিষ্ট কোনো কাঠামো ছাড়া।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক মহলে বিষয়টি আলোচিত হলেও স্থায়ীভাবে কোনো পরিবর্তন আসেনি। সামান্য টুর্নামেন্ট আয়োজন বা অংশগ্রহণে ব্যতিক্রম ছাড়া নিয়মিত খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণের জন্য স্থায়ী নীতিমালা বা দিকনির্দেশনা নেই।

আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে নির্দেশনা দিল মন্ত্রণালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের অনুযোগগুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। আমাদের জনবল ও অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা রয়েছে ঠিকই, তবে সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমরা পরিকল্পনা নিচ্ছি। খেলাধুলার উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।’

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে পূর্ণাঙ্গ বিভাগে রূপান্তর, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষক নিয়োগ, পৃথক মাঠ ও সরঞ্জাম সরবরাহ এবং বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা হোক, যেন তারা শুধু পড়ালেখাই নয়—শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থেকে দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence