সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে বিনামূল্যের পাঠ্য বই

 বিনামূল্যের পাঠ্যবই নষ্ট হচ্ছে
বিনামূল্যের পাঠ্যবই নষ্ট হচ্ছে   © সংগৃহীত

প্রতিবছর সরকারের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য কোটি কোটি কপি পাঠ্যবই ছাপাচ্ছে। কিন্তু এসব বই সংরক্ষণে জন্য নিজস্ব কোন সংরক্ষণাগার নেই। ফলে দেশের মেট্রোপলিটন সিটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসগুলোতে বিনামূল্যের পাঠ্যবইগুলো পড়ে আছে অযত্ন, অবহেলায়। বছরের পর বছর এসব বই পড়ে থাকায় নতুন বই রাখার জায়গা হচ্ছে না। এসব বই যেন এখন গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।

প্রতিবছর বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা এবং ছাপার পরিধিও বাড়ছে। এমন অবস্থায় এনসিটিবি সরকারি বিনামূল্যের বই সংরক্ষণ নিয়ে বেকায়দায় পড়ছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারের কোন নির্দেশনা না থাকার কারনে শিক্ষা অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী সংখ্যায় এগিয়ে নর্থ সাউথ-ড্যাফোডিল-ইউরোপিয়ান

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, মজুত থাকা পুরনো পাঠ্যবই বিক্রির জন্য ২০২০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছিল । ওই নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জমে থাকা বই প্রকাশ্য নিলামে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হযেছে। কিন্তু মহানগর পর্যায়ে কোনও নির্দেশনা না থাকায় অব্যবহৃত পাঠ্যবই নিয়ে বিপাকে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। রাজধানীর কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বিপুল পরিমাণ পুরনো বই রাখা হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, বিনামূল্যের বইয়ের আনুমানিক চাহিদাপত্র দেওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সেই সংখ্যক বই সংগ্রহ না করার কারনে প্রতি বছর অতিরিক্ত পাঠ্যবই পড়ে থাকছে। শিক্ষার্থীর তুলনায় বেশি বইয়ের চাহিদা দেয়ার কারনে এ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

মহানগর পর্যায়ে বেশকিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত বইয়ের চাহিদা দিয়ে বই নেয়নি। এছাড়া কিন্ডার গার্টেনগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চাহিদা দেয়। কিন্তু সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে তারা চাহিদা দিয়েও বই সংগ্রহ করেনা। এমনও অবিযোগ আছে অনেক প্রতিষ্ঠান বই রাখার জায়গা না থাকায়, তা বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: মেসে আপত্তিকর অবস্থায় ইবি ছাত্র-ছাত্রী

মহনগরের থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে ২০২০ সালে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসহ এ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান চাওয়া হয়েছে।

পুরোনো বইয়ের সমস্যা সমাধানের জন্য ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে একটি প্রস্তাব পাঠান। প্রস্তাবে বলা হয়, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য চাহিদার ভিত্তিতে আমরা প্রতি শিক্ষাবর্ষে এনসিটিবি বরাবর পাঠ্যপুস্তকের চাহিদা পাঠাই। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের আগাম পাঠ্যবইয়ের চাহিদা পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাহিদা পাঠায়। ফলে প্রতি শিক্ষাবর্ষে কিছু উদ্বৃত্ত পাঠ্যবই গোডাউনের একটি বড় অংশ দখল করে আছে। উদ্বৃত্ত পাঠ্যবই বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রির অনুমতি পেলে গোডাউনে পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাবে।

তবে থানা শিক্ষা অফিসের এ প্রস্তাবের বিষয়ে ওপরমহল থেকে কোনও সুরাহা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

এদিকে বই নিয়ে বেকায়দায় আছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও। করোনা পরিস্থিতির কারনে ২০২১ সালে বইয়ের চাহিদার তুলনায় সে পরিমাণ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি । এছাড়া বিগত বছরগুলোতে কিছু অতিরিক্ত বইও জমা হয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা বইগুলো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় অযত্নে নষ্ট হচ্ছে। সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারাও এসব বই ফেরত নিতে চাচ্ছেন না।

আরও পড়ুন: বিভাগ ও শিক্ষক না থাকলেও শিক্ষার্থী ভর্তি নিচ্ছে ইবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, সরকারি প্রাথমিকের মতো কর্ণফুলী পেপার মিল যদি বিদ্যালয় থেকে বই সংগ্রহ করে নিতে পারে তাহলে এই সমস্যা সমাধান হতে পারে। অথবা সরকারি কাগজকলকে বিনা পয়সায় বই দেওয়া যেতে পারে। তবে যদি প্রতিষ্ঠানকে বই বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হলে তা নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। বেশি করে আগাম চাহিদা দেওয়াও বন্ধ হবে না। এতে করে আরও বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বই নিয়ে সমস্যা নেই। কারণ, বই জমা হলে তা কর্ণফুলী কাগজকলকে দেওয়া হয়। তাছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বই নেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধান থাকে। তবে কিন্ডার গার্টেনগুলো বই নিয়ে নষ্ট করায় এ বছর কিন্ডার গার্টেনে প্রথম দফায় ৫০ শতাংশ বই সরবরাহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরে প্রয়োজন তাদের আবার বই সরবরাহ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence