চারবার হাত বদল হয় পরিকল্পনামন্ত্রীর আইফোন, পরে যেভাবে উদ্ধার হলো

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

ছিনতাই হওয়ার পর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের আইফোনটি পর চারবার হাত বদল হয়। প্রত্যেকেই কেনার পর যখন বুঝতে পারে সেটি পরিকল্পনামন্ত্রীর। তখন তারা বিক্রি করে দেয়। অবশেষে দেড় মাসের বেশি সময় পর এটি উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্য একটি মামলার তদন্তের সূত্র ধরে পরিকল্পনামন্ত্রীর আইফোনটি উদ্ধারসহ ছিনতাই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির রমনা বিভাগ পুলিশ।

পুলিশ বলছে, জীবন নামে এক চোরাই মোবাইল কারবারিকে গ্রেফতার করে রমনা বিভাগ পুলিশ। মূলত তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুরো চক্রটি ধরা পড়ে ও মোবাইলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়।

পুলিশের দাবি, জীবন আইফোনটি পেয়েছে আরিফ নামে একজনের কাছ থেকে। আরিফ মন্ত্রীর আইফোনটি সফওয়্যার ব্যবহার করে আনলক করে জীবনের কাছে বিক্রি করে। আরিফ আইফোনটি নিয়েছিল জাকির নামে একজনের কাছ থেকে। জাকির পেয়েছে সগির আর সুমনের কাছ থেকে। আর সগির আর সুমনই আইফোনটি ছিনতাই করেছিল বলে দাবি পুলিশের।

আজ সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান।

তিনি বলেন, গতকাল রবিবার ধারাবাহিক অভিযানের এক পর্যায়ে ধানমন্ডি থানার আরেকটি ছিনতাই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া আইফোন উদ্ধারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা হতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।’

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সগির, মো. সুমন মিয়া, মো. জাকির, হামিদ আহম্মেদ সোহাগ ওরফে আরিফ ও মো. জীবন। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি মোটরসাইকেল, বিভিন্ন মডেলের ১০টি ফোন, ১টি ল্যাপটপ ও মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়।

ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এক ভুক্তভোগী গত ১২ জুলাই ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ওই দিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে রিকশায় যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল যোগে অজ্ঞাতনামা দুইজন তার ভ্যানিটি ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যায়। ওই মামলার তদন্তকালীন সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সগির ও সুমন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত থেকে মামলার বাদীর মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

এই কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সগির ও সুমন মিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জাকিরকে গ্রেফতার করা হয়। জাকিরই জানায় সে আরিফের কাছে আইফোনটি বিক্রি করেছিল। আরিফ টেকনোলজিতে এক্সপার্ট। সে সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে লক করা মোবাইল আনলক বা যে কোনো মোবাইল ব্যবহারের উপযোগী করতে পারে। তার কাছ থেকে টার্গেটকৃত ভিকটিমের মোবাইল উদ্ধার করা হয়। তার কাছে থাকা ল্যাপটপ যাচাইকালে পরিকল্পনামন্ত্রীর ছিনতাইকৃত আইফোনে ছবি দেখতে পাই।

‘সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরিফ জীবনের ঠিকানা দেয়। জীবনের নিকট থেকে মন্ত্রীর আইফোনটি উদ্ধার করা হয়।’

ডিসি সজ্জাদুর আরও বলেন, মন্ত্রীর ছিনতাই হওয়া মোবাইলটি আইফোন। আইফোনের লক খোলা খুবই কঠিন। তবে আরিফই মোবাইলটি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে আনলক করেছিল। আনলক অবস্থাতেই আমরা আইফোনটি উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

উল্লেখ্য, গত ৩০ মে রাজধানীর বিজয় সরণিতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ১ জুন একনেক সভা শেষে ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি তার মোবাইল (আইফোন) ছিনতাইয়ের ঘটনাটি বর্ণনা করেন।


সর্বশেষ সংবাদ