প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিলেন যুবলীগ কর্মী

স্ত্রীর জানাজায় প্যারোলে অংশ নেন যুবলীগ কর্মী মো. সুমন
স্ত্রীর জানাজায় প্যারোলে অংশ নেন যুবলীগ কর্মী মো. সুমন  © সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন যুবলীগের কর্মী মো. সুমন (৪৫)। সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে দড়ি সোনাকান্দা মোড়ে স্ত্রীর জানাজার নামাজে অংশ নেন তিনি। এর আগে রবিবার সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত সন্তান জন্ম দেন তিনি।

বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হন তিনি। গ্রেপ্তারের পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশি প্রহরায় সুমনকে তার স্ত্রীর জানাজায় নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সুমনের বড়ভাই ইকবাল হোসেন জানান, তার ভাই সুমন বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বন্দর উপজেলার সোনাকান্দা ইউনিয়ন (বিলুপ্ত) শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে কোনো কমিটিতে পদ না থাকলেও যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সুমন গ্রেপ্তার হবার পর টানা দুইদিন থানা ও আদালত ছুটে বেরিয়েছেন তার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হাফেজা বেগম। 

আরও পড়ুন : ‘একটা দলের নেতারা দিনভর বিএনপি নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে, রাতে নেতাদের বাসায় ধরনা দেয়’

চলতি মাসের শেষ দিকে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ থাকলেও শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি মৃত সন্তান জন্ম দেন। এরপর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। বাচ্চার মরদেহ রবিবারেই দাফন করা হয়। স্ত্রীর জানাজার সময় প্যারোলে মুক্তি পেলেও সন্তানের জানাজায় অংশ নিতে পারেননি সুমন।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জানাজার আগে স্বজনরা তাকে মৃত নবজাতকের ছবি মোবাইল ফোনে দেখালে কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমন। জানাজার নামাজের আগে স্ত্রী ও সন্তানের রুহের মাগফিরাত জন্য সবার দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।

স্থানীয়রা বলেন, সুমন বন্দরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা খান মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। খান মাসুদের প্রভাবে সুমন এলাকার ব্রডব্যান্ড সংযোগের ব্যবসারও একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে ‘হত্যা ও সশস্ত্র হামলা’ চালানোর অভিযোগে করা বেশ কয়েকটি মামলার আসামি মাসুদ বর্তমানে পলাতক। সুমন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কিছুদিন আত্মগোপনে থাকলেও পরে তার এলাকায় ফিরে আসার তথ্য দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা।


সর্বশেষ সংবাদ