পূজামণ্ডপে অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে: আইজিপি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৫০ PM
দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজামণ্ডপগুলোয় যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, সে জন্য পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি এ কথা জানান।
আইজিপি বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজায় এখন পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৯টি ঘটনা আমলে নিয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় করা ১৫টি মামলায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ১ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূজামণ্ডপ, মন্দির ও আশপাশের এলাকায় কড়া নজরদারি চালানো হয়েছে। এবার সারাদেশে ৩১ হাজার ৬০৬টি পূজা মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। দেশজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে কোনো ঘটনাই বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারেনি, সব কটি শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে।
বাহারুল আলম জানান, পূজাকেন্দ্রিক গুজব ছড়ানো রোধে পুলিশ সদর দপ্তরের সাইবার ইউনিট বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। পুরোনো ভিডিও বা ছবি নতুন করে ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়ার চেষ্টা হলে তা শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ট্রানজিশনাল সময় পার করছি। সামনে নির্বাচন, এই প্রেক্ষাপটে কেউ যেন ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করে, এমন চেষ্টায় লিপ্ত না হয় সেজন্য আমরা সজাগ আছি। পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় সার্বিক পরিস্থিতির ওপর বিশেষ নজরদারি চলছে।’
আইজিপি বলেন, ‘আমরা এবার পূজাকে ছোট-বড় বা গুরুত্বপূর্ণ-অগুরুত্বপূর্ণ এভাবে ভাগ করিনি। প্রতিটি মণ্ডপকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, এমনকি দুর্গম এলাকার পূজামণ্ডপেও পুলিশি নজরদারি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের ছবি ধারণ, যুবককে কান ধরে উঠবস, অতঃপর...
সম্প্রতি গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আইজিপি বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে এসব ঘটছে। তবে, এসব ইস্যুকেও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। পুলিশ বাহিনীর কেউ এসব ঘটনায় জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। গত বছরের জুলাই আন্দোলনের ঘটনায় মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৫৫টি মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১৮টি হত্যা মামলায় ১ হাজার ৯৪১ জন আসামি রয়েছে। আর অন্যান্য ৩৭টি মামলায় ২ হাজার ১৮৫ জন আসামি রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অনেকে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সমাজে অস্থিরতা তৈরি করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এজন্য পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে। আইজিপি বলেন, নির্বাচনকালে ২ লাখ ৫০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শেষ হবে।’
আইজিপি বলেন, মামলা-বাণিজ্য এখনো চলছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে যদি আসামি করা হয় এবং তাতে পুলিশের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলাই-আগস্ট মাসের ঘটনায় ১ হাজার ৭০০টির বেশি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৬৬টি হত্যা মামলা ও ৯৭৪টি অন্যান্য মামলা। অধিকাংশ মামলার তদন্ত চলমান। নবীন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অভিজ্ঞ কর্মকর্তারাও এসব মামলার তদন্ত করছেন বলে জানান তিনি।