বাদ আসর পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত হবেন নুসরাত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:১৯ AM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:২৪ AM
ফেনীর সোনাগাজী সাবের পাইলট হাইস্কুল মাঠে বাদ আসর জানাজা হবে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির। এরপর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নুসরাতের চাচা নুরুল হুদা শামীম জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বাদ আসর সোনাগাজী সাবের পাইলট হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বুধবার রাতে নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে। এর পর তাকে নেয়া হবে ফেনীর সোনাগাজীতে।
এর আগে বুধবার রাতে ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান।
৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসাছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে, এমন সংবাদে তিনি ছাদে যান। সেখানে বোরকাপরা ৪-৫ জন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়।
অস্বীকৃতি জানালে তারা রাফির গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, নুসরাত কয়েকদিন আগে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছিল। সেই ঘটনার জেরে ওই অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা তার বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।
চিকিৎসকের সামনে পুলিশের জবানবন্দিতে নুসরাত জানায়, পরীক্ষার কেন্দ্রের বাইরে তাকে কয়েকটি মুখোশ পরা মেয়ে ডেকে নিয়ে যায় এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলাটি তুলে নিতে বলে। নুসরাত তাতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
গত ২৭শে মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে এমন অভিযোগে পুলিশের কাছে মামলা করে নুসরাতের পরিবার।
রাফিকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ এ আদেশ দেন। তার আগে একই আদালত আসামী নুর হোসেন, কেফায়েত উল্লাহ, আলাউদ্দিন ও শহীদুল ইসলামকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রত্যেককেই সাত দিন করে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে আটক উম্মে সুলতানা পপি (অধ্যক্ষের শ্যালিকার মেয়ে) এবং বুধবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহারনামীয় আসামি যোবায়ের হোসেনকে আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আবেদনের ওপর আজ শুনানি হবে।