‘নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না’—চিরকুট লিখে যুবকের আত্মহত্যা
- বাগেরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ PM , আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০১:২৮ PM
‘নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না’—এমন একটি হৃদয়বিদারক চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। বুধবার (২ জুলাই) ভোর ৬টার দিকে নিজের বসতঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। জানা গেছে, আত্মহত্যা করা যুবকের নাম নাজমুল হাসান বিশ্বাস (২৫)। তিনি ওই গ্রামের বিশ্বাস আ. হকের ছেলে।
পুলিশ ও পরিবার জানায়, বুধবার সকালে নাজমুলকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বজনেরা পুলিশে খবর দেন। পরে ফকিরহাট মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে ফকিরহাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম শামীম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক মীর ও এসআই আ. রাজ্জাক প্রাথমিক তদন্ত পরিচালনা করেন। পুলিশ নাজমুলের ঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে, যেখানে লেখা রয়েছে তার অন্তরের যন্ত্রণার কথা।
চিরকুটে নাজমুল লিখেছেন, ‘আব্বা, আম্মা, হাজেলা আপা, জিয়া ভাই, জিনিয়া তাকরিম সহ সবাই আমাকে মাফ করে দিও। সবাই ভালো থেকো। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। হিংসা, অহংকার মানুষকে শেষ করে দেয়। আমি মানসিক যন্ত্রণায় আর বাঁচতে পারছি না। নিজেকে নিজেই বিরক্ত লাগছে। কিছু মানুষ আমার কাছে টাকা পাবে, দিয়ে দিও। আমার আব্বা হলো পরিবারের রাজা, কিন্তু আমি যা করেছি তার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। তাই এই পথ বেছে নিলাম। সবার অপ্রিয়—বিশ্বাস নাজমুল।’
নিহতের বাবা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নাজমুল মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। তবে সে কখনও পরিবারের সঙ্গে এসব বিষয় খোলামেলা আলোচনা করেনি।
ফকিরহাট মডেল থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক মীর বলেন, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হচ্ছে। চিরকুটের লেখাটি নাজমুলের কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।