যশোরের শার্শায় স্কুলের জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টা, গ্রামবাসীর বাধায় কাজ বন্ধ
- বেনাপোল প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ০৯:৫৩ PM , আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৮:২১ AM
যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউনিয়নের জামতলা টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে রাতের আঁধারে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। তবে দুই গ্রামের গ্রামবাসীর প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ।
অভিযোগ রয়েছে, গত ২৬ জুন রাত ১২টার পর টেংরা গ্রামের মনিরুজ্জামান ওরফে সার মনির নিজ দলবলসহ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মাণসামগ্রী ফেলে দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে টেংরা ও পাশের সামটা গ্রামের শতাধিক মানুষ রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে বাধা দেন। পরে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম রবিউল ইসলামকে অবহিত করা হলে বাগআঁচড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই ইমদাদুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ বন্ধে মৌখিক নির্দেশ দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের জমির একটি অংশে স্থায়ী দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টার প্রমাণ এখনও রয়ে গেছে—ঘটনাস্থলে পড়ে আছে বালি, সিমেন্ট ও ইট।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যালয়ের জমি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য বরাদ্দ। এটি সরকারি সম্পত্তি, যেখানে ব্যক্তিগত স্থাপনা গড়ে তোলা আইনগত ও নৈতিকভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ।
তাদের দাবি, অভিযুক্ত মনির এখনও গোপনে নির্মাণকাজ চালানোর চেষ্টা করছেন। তারা দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ কামনা করেন।
ওই এলাকার বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের জায়গায় স্থাপনা হলে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটবে। এজন্য আমরা বাধা দিয়েছি। আশা করছি প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমি আগে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করতাম। আওয়ামী ক্যাডাররা সেই ঘর ভেঙে দিয়েছে। এখন যদি স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়, তবেই আমি ঘর তুলব। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. কাজী নাজিব হাসান বলেন, সরকারি জমিতে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়ালিউর রহমান জানান, এর আগেও মনির একই স্থানে দোকান নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন। তখন আমরা বাধা দিলে তিনি দাবি করেন, জায়গাটি তার। আমরা জমি পরিমাপ করে তাকে নিজ জমিতে ঘর নির্মাণের পরামর্শ দিই। তবে এবার তিনি কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই গোপনে কাজ শুরু করেছেন। প্রয়োজনে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।