স্বামীর অধিকার ও সন্তান ফিরে পেতে অনশন, শেষে আত্মহত্যার চেষ্টা
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫১ PM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫১ PM

স্বামী ও সন্তান ফিরে পেতে দুই সপ্তাহ ধরে স্বামীর বাড়ির সামনে অনশন করছিলেন মিতু আক্তার (৩৫)। কিন্তু স্বামীর পরিবারের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে শেষমেশ ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তিনি। বুধবার (১২ মার্চ) রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে চরফ্যাশনের ওমরপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে স্বামী হাসান সাজীর বাড়িতে এসে অবস্থান নেন মিতু। তবে তাকে ঘরে উঠতে না দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। দুই সপ্তাহ ধরে স্বামীর অনুপস্থিতিতেই বাড়ির সামনে অবস্থান নেন তিনি।
মিতু আক্তারের সঙ্গে ওমান প্রবাসী যুবক হাসান সাজীর পরিচয় হয় ইমোর মাধ্যমে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২১ সালে দেশে ফিরে তারা বিয়ে করেন। দুই বছর ঢাকায় সংসার করার পর জন্ম নেয় তাদের কন্যাসন্তান রোজা আক্তার। সংসারের খরচ চালাতে দুজনই কন্যাকে নিয়ে সৌদি আরবে যান এবং একই মালিকের অধীনে কাজ নেন।
কিছুদিন পর হাসান কৌশলে শিশুকন্যাকে দেশে পাঠিয়ে দেন। এরপর তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন মিতু। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে হাসান দেশে ফিরে এসে নতুন করে বিয়ে করেন। মিতু দেশে ফিরে স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেন।
মিতু অভিযোগ করেন, অনশনের সময় মাঝেমধ্যে তার শাশুড়ি এসে নির্যাতন চালাতেন। সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে উল্টো বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিতেন। দীর্ঘদিনের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
হাসান সাজীর মা রহিমা বেগম বলেন, আমার ছেলে যদি বিয়ে করে থাকে, সেটা তার ব্যাপার। এই মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে নেই।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চরফ্যাশন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল ইসলাম সুমন জানান, মিতু আক্তার ৯টি ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন বলে তার শ্বশুর জানিয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বামী হাসান সাজীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।