ফাইনালে ওঠার মিশনে সহজ লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ
বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ   © সংগৃহীত

পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। মাত্র দুই ওভারের মধ্যেই তুলে নেয় দুই উইকেট। এরপর ৫০ রানের আগেই পাকিস্তানের ৫ উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় টাইগাররা।

তবে এরপরই চিত্র বদলে যায়। মিডল ও স্লগ ওভারে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস করে বাংলাদেশ, যার পুরো সুবিধা নেয় পাকিস্তান। ক্যাচ ফেলার সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোহাম্মদ হারিস ও শাহিন আফ্রিদির মতো ব্যাটাররা দলকে চাঙ্গা করে তোলেন। তবুও পুঁজিটা বেশি দূর এগোয়নি। নাগালের মধ্য রেখেই দ্য গ্রিন ম্যানদের থাকায় বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে পাকিস্তান। দলের হয়ে ২৩ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩১ রানের ইনিংস মোহাম্মদ হারিস।

ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেই প্রত্যাশিত হয়নি পাকিস্তানের। দলীয় ৫ রানের মধ্যেই জোড়া উইকেট খুইয়ে বসে দ্য গ্রিন ম্যানরা।

প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের শুরুতেই মাত্র ৪ রান করা শাহিবজাদা ফারহানকে ফেরান তিনি। তার ফুলার লেন্থের ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ফারহান। সহজ সেই ক্যাচটি নিখুঁতভাবে তালুবন্দি করেন রিশাদ।

এই উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এক বিশেষ মাইলফলকে পৌঁছে যান তাসকিন, এই ফরম্যাটে তার শততম উইকেট এটি। সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানের পর তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের ক্লাবে তাসকিন।

দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই উইকেট মিছিলে যোগ দেন মেহেদী। ফেরান ফর্মহীন সাইম আইয়ুবকে, তিন বল মোকাবিলায় কোনো রান না করেই ফেরেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার। মিড অনে ক্যাচ দেন তিনিও, এবারও ক্যাচটি নেন রিশাদ।

চলতি এশিয়া কাপে ৬ ম্যাচে সাইমের চতুর্থ শূন্য রানে আউট হওয়া এটি, প্রথম তিন ম্যাচেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।

দলীয় ৫ রানের মধ্যেই জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল পাকিস্তান। এরপর ইনিংস গুছিয়ে নিতে চেষ্টা করেন ফখর জামান ও সালমান আলি আগা। তবে এত সতর্ক ব্যাটিংয়ের পরও লাভ হয়নি। উল্টো জোড়া উইকেট হারায় দ্য গ্রিন ম্যানরা।

সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে ফের আঘাত হানেন রিশাদ। অফ-মিডল স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারিতে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তুলে দেন ফখর। ২১ বল খেলে করেন মাত্র ১৩ রান।

পরের ওভারে ফের সাফল্য এনে দেন রিশাদ। এবার ফেরান হুসেইন তালাতকে। ৭ বল মোকাবিলায় মাত্র ৩ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটার।

১১তম ওভারের পঞ্চম বলে আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। উইকেটের পেছনে জাকেরের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সালমান আলি। দ্য ফিজের কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে ব্যাট ও প্যাডের মাঝ দিয়ে বল সরাসরি উইকেটকিপারের হাতে চলে যায়। মাঠের আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। তবে আত্মবিশ্বাসী জাকের রিভিউ নেন। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায়, বল ব্যাটে লেগেই গিয়েছিল।

এক ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদির উইকেট নিতে একাধিক সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তিনবারই বেঁচে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দেন তাসকিন। এই পেসারের শর্ট বলেও টপ-এজ হয়ে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর গ্লাভসে সহজ ক্যাচ। ১৩ বলে ১৯ রান করে ফেরেন শাহীন।

শুরুর ধাক্কা সামলে হারিসের ব্যাটে দলীয় তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে পাকিস্তান। সপ্তম উইকেটে ২৪ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন নওয়াজ ও হারিস। তবে ইনিংসের ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে সেই জুটি ভাঙেন মাহেদী। ২৩ বলে ৩১ রান করে ফেরেন হারিস।

দলীয় ১২০ রানের মাথায় ফের উইকেট হারায় পাকিস্তান। তাসকিনের বলে এক্সট্রা কাভার অঞ্চলে পারভেজ ইমনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ফেরার আগে ১৫ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ২৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

শেষদিকে ফাহিম আশরাফের ব্যাটে চড়ে সম্মানজনক পুঁজি পায় দ্য গ্রিন ম্যানরা। ৯ বলে ১ চারে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার।


সর্বশেষ সংবাদ