ফারুকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ, চিঠিতে ৮ পরিচালক কী লিখেছেন

ফারুক আহমেদ
ফারুক আহমেদ  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির চেয়ার ঘিরে নানা দ্বন্দ্ব ও গুঞ্জন উঠেছিল, শিগগিরই দেশের ক্রিকেটের শীর্ষ এই পদ ছাড়ছেন ফারুক আহমেদ। মূলত ফারুকের কথার সূত্র ধরেই এই আলোচনার মাত্রা ছাড়ায়। যেখানে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিসিবি সভাপতির পদে পরিবর্তন চান বলে উল্লেখ করেন ফারুক। যদিও সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ (২৯ মে) অবশেষে ফারুক নিজেই জানিয়েছেন, 'আমি পদত্যাগ করছি না!'

কিন্তু পদত্যাগে অনীহা দেখালেও এবার হয়তো আর নিজের পদ ধরে রাখতে পারছেন না ফারুক আহমেদ। এরই মাঝে ফারুকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিসিবির ৮ পরিচালক। ফলে, নিজের চেয়ার ধরে রাখতে মরিয়া ফারুককে হয়তো শেষমেশ লজ্জিত হয়ে বিদায় নিতে হচ্ছে।

পরিচালকদের এই অনাস্থা চিঠিতে স্বাক্ষরকারী ৮ পরিচালক হচ্ছেন– নাজমুল আবেদীন ফাহিম, মাহবুব উল আনাম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, ফাহিম সিনহা, মঞ্জুর আলম, সাইফুল আলম স্বপন, কাজী ইনাম ও সালাউদ্দিন চৌধুরী। কেবল আকরাম খান সেই চিঠিতে স্বাক্ষর করেননি। সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে।

জানা গেছে, ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেছেন ৮ পরিচালক। তার আগে দেখে নেওয়া যাক ক্রীড়া পরিষদকে দেওয়া চিঠিতে কি আছে। পুরো চিঠিটি নিচে তুলে ধরা হলো :
আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচিত এবং নিয়মিত সদস্য। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে আমরা বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুসারে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে বদ্ধপরিকর এবং সূচারুরূপে বিসিবির কার্যক্রম পরিচালনায় একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিগত ০৫ আগস্ট, ২০২৪ এ বিগত সরকারের পতনের পরবর্তীতে পূর্বতন বোর্ডের নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড শুধরে বিসিবিকে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে জনাব ফারুক আহমেদকে সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুন: ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা, এনএসসিতে বিসিবির ৮ পরিচালকের চিঠি

সভাপতি হিসেবে তাকে দায়িত্ব অর্পণের মূল লক্ষ্য ছিল; বিসিবির গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন এর মাধ্যমে একটি সময়োপযোগী গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা: বিগত পতিত সরকারের আমলে বিসিবির অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি শ্বেতপত্র প্রণয়ন করা এবং স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগকৃত অতিরিক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

দায়িত্বপ্রাপ্তির সাথে সাথে বোর্ডের কমিটিসমূহের পূনর্গঠনের কথা থাকলেও দীর্ঘ ০৫ মাস পর তিনি বোর্ড এর বিভিন্ন কমিটি পুনর্গঠন করেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, বোর্ড সভাপতি জনাব ফারুক আহমেদের স্বেচ্ছাচারিতা ও একক আধিপত্যের কারণে বেশিরভাগ পরিচালকবৃন্দই স্বাভাবিকভাবে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ও স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের পাশ কাটিয়ে বর্তমান বোর্ড সভাপতির এককভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ, একক আধিপত্য ও স্বেচ্ছাচারিতায় বিসিবির অভ্যন্তরে যেমন অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে তেমনি দেশে ও দেশের বাহিরে বিসিবির সুনাম ক্ষুণ্ন সহ বাংলাদেশ ক্রিকেটের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে চলেছে।


বিসিবির কাজ সূচারুরূপে সম্পন্ন করণের জন্য বিসিবির গঠনতন্ত্র মোতাবেক পরিচালনা পর্ষদ এর বিভিন্ন পরিচালক তথা সদস্যদেরকে প্রধান করে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটি তাদের উপর অর্পিত কাজের বিষয়ে স্বাধীন থাকেন এবং বিসিবি সভাপতি উক্ত কমিটির সাথে আলাপ আলোচনা পূর্বক বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা কিন্তু জনাব ফারুক আহমেদ কোনোরকম গণতান্ত্রিক পন্থা অনুসরণ না করেই এবং উক্ত কমিটির চেয়্যারম্যানগনের এর সাথে কোনোরূপ পরামর্শ ব্যতিরেকেই কমিটির এখতিয়ারাধীন বিভিন্ন বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। এর ফলে পরিচালক এবং বিসিবির বিভিন্ন কমিটি প্রধান হিসেবে আমরা আমাদের নিজস্ব কোন সিদ্ধান্ত বা মতামত প্রদান করতে পারছি না। 

অনেক ক্ষেত্রে আমরা পরিচালকগণ তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে কিছুই জানতে পারিনা। সুতরাং বিসিবির মতো একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানকে তথা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে আমাদের যে বলিষ্ঠ ও কার্যকর ভূমিকা রাখা উচিত যথেষ্ট দক্ষতা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমরা যথাযথভাবে সেই ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছি না।

উদাহরণ স্বরূপ বিসিবি সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করে জনাব ফারুক আহমেদ তার একক সিদ্ধান্তে ও পরিচালনা পর্ষদের সাথে কোনোরূপ আলাপ আলোচনা না করেই জাতীয় ক্রিকেট দলের তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহেকে অপসারণ করেন। যাহা আমরা অন্যান্য পরিচালকগণ পরবর্তীতে বোর্ড সভাপতির প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানতে পারি। জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে বিসিবির সংবিধান এর অনুচ্ছেদ ১৪ (ব) মোতাবেক পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকলেও ফারুক আহমেদ সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই জাতীয় দলের প্রধান কোচকে অপসারণ করেন। এছাড়া বিকল্প অনুসন্ধান না করেই বিসিবির চুক্তিভুক্ত বিভিন্ন স্পেশালাইজড কোচকে আমাদের মতামত বা সুপারিশ না নিয়েই সম্পূর্ণ একক সিদ্ধান্তে অপসারণ করেন যাহা বিসিবির সংবিধানের পরিপন্থি এবং সভাপতির ক্ষমতার অপব্যবহারের নামান্তর।

পরিচালনা পর্ষদের সভায় পতিত সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কতিপয় অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে অপসারণের বিষয়ে আলোচনা করা হলেও ফারুক আহমেদ সেই সকল কর্মীদের ছাঁটাই না করে বরং তাদেরকে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে বহাল রেখেছেন। উপরন্তু নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলে তার পছন্দের লোকেদের যথাযথ দক্ষতা ও যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও এবং বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত ও অনিয়মের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়মবহির্ভূতভাবে বিসিবিতে নিয়োগ প্রদান করেছেন এবং একইভাবে তিনি তার নিজস্ব লোকদের পদোন্নতি দিয়ে বোর্ডের সৎ ও কর্মঠ কর্মীদের কোণঠাসা করে রেখেছেন। আমরা নিম্ন স্বাক্ষরিত পরিচালকগণ মনে করি এতে সভাপতি হিসেবে তার প্রাথমিক লক্ষ্যের অন্যতম শর্তপূরনে তিনি সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়াও নিম্ন স্বাক্ষরিত পরিচালকগনের মূল লক্ষের বিষয়ে তাগিদ থাকা স্বত্বেও দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের ও পরিমার্জনের ব্যাপারে সভাপতি দীর্ঘসময় অতিক্রান্ত হলেও কোনোরকম উদ্যোগ গ্রহণ না করা তথা অনীহাকে তার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার শামিল এবং তিনি তার অভীষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে তিনি বিচ্যুত হয়েছেন বলে আমরা মনে করছি। 

আপনি জ্ঞাত আছেন যে, অনুষ্ঠিত ১১তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) এর আয়োজনে দুর্বার রাজশাহী সহ আরও একটি দুর্বল দলকে যোগ্যতা না থাকা স্বত্বেও অন্তর্ভুক্তির পূর্বে অধিকতর যাচাই বাছাই না করেই এবং নিয়মানুসারে ব্যাংক গ্যারান্টির টাকা জমা না নিয়েই পরিচালনা পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে নিজের একক সিদ্ধান্তে সভাপতির ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিপিএল এ খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন জনাব ফারুক আহমেদ। যার ফলে দুর্বার রাজশাহী ও চিটাগাং কিংস কর্তৃক খেলোয়াড়/স্টাফদের পারিশ্রমিক পরিশোধে ব্যর্থতা ও নানা অনিয়মের চিত্র সবার সামনে চলে আসলে বিসিবির সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়া সহ বিপিএল এর অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। 

বিসিবির নিয়মানুসারে যে কোন ইভেন্ট তথা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ এর মতো বড় ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে বিসিবির এনলিস্টেড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর নিকট হতে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং যাচাইবাছাই এর মাধ্যমে যোগ্য ও অভিজ্ঞ কোম্পানিকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু ফারুক আহমেদ বোর্ড সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে সেই নিয়মগুলো প্রতিপালন করা হচ্ছে না। বিসিবি সভাপতি এনলিস্টেড কোম্পানিগুলোকে সুযোগ প্রদান না করে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একক সিদ্ধান্তে তার মনোনীত অখ্যাত ও নিম্নমানের ও অনিবন্ধিত ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে কাজ প্রদান করেন। এতে বিসিবি আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং বিভিন্ন ইভেন্টে চরম অব্যবস্থাপনার ঘটনা ঘটে চলেছে যা যথেষ্ট হতাশাজনক এবং বিসিবি পরিচালনায় দুর্বল ব্যবস্থাপনারই প্রতিফলন ঘটছে। 

জনাব ফারুক আহমেদ বিসিবি সভাপতি হওয়ার সুবাদে তিনি বিসিবির অধিভুক্ত ক্লাবগুলোতে ক্ষমতার অপব্যাহার করে অযাচিত প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। শুধু আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তিনি ক্লাব দুর্নীতিতে সরাসরি নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন, নিজের পদ ও অবস্থানের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ক্লাব দখল করছেন। এছাড়া তার তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে ক্লাবগুলোর খেলার মান অত্যন্ত নিম্নমানের দিকে ধাবিত হচ্ছে। 

এছাড়া চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও ছাত্রহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসীকে আশ্রয় প্রদান ও তার সাথে বিসিবির টাকায় প্রমোদ ভ্রমণ করেছেন মর্মে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে যার ফলে বিসিবির সুনাম চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগন মনে করি। 

বোর্ড সভাপতি জনাব ফারুক আহমেদের এইসকল স্বৈরাচারী মনোভাব ও কর্মকাণ্ডকে পরিচালনা পর্ষদগন সমর্থন না করলে তিনি আমাদের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ফোরামে আমাদেরকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে আসছেন। এছাড়া আমাদের না জানিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এককভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ে সেগুলো ভূতাপেক্ষিকভাবে পাশ করিয়ে নিতে পর্ষদের উপর বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন যা বিসিবির গঠনতন্ত্রের চরম লঙ্ঘন। 

আপনার সদয় অবগতির জন্য আরও জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল উত্তরোত্তর ভালো পারফরমেন্সের মাধ্যমে সুনামের সাথে দীর্ঘদিন যাবত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট র‍্যাংকিং এ ৬-৭ নম্বর অবস্থান ধরে রেখেছিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, ফারুক আহমেদ সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর হতে তার স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডে, ক্রিকেট অপারেশনে ও বিভিন্ন বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার ফলে একের পর এক সিরিজ হার।

সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের নিকট টেস্ট ম্যাচ এর পরাজয় তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এছাড়াও আঞ্চলিক ক্রিকেটকে শক্তিশালী করা, তাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আঞ্চলিক ক্রিকেট ক্লাবসমূহের মধ্যে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি দূরীকরণ এবং লীগ ও জাতীয় পর্যায়ে খেলোয়াড় তৈরিতে কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করেননি যা হতাশাজনক। তার সভাপত্তিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোন উন্নতির লক্ষণ নেই বরং দিন দিন আরও অবনমনের পথে যাচ্ছে এবং আমরা দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালনা পর্ষদগন যথেষ্ট সক্ষমতা ও সদিচ্ছা থাকা স্বত্বেও বিসিবি সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা ও একগুয়েমির কারণে আমাদের অপর অর্পিত দ্বায়িত্ব সঠিকভাবে প্রতিপালন করতে সক্ষম হচ্ছি না। যার ফলে বিসিবি এবং তৎসঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

অতএব, বিসিবির মতো একটি প্রতিষ্ঠান যা দেশের ক্রিকেট অঙ্গনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থাৎ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সমুজ্জ্বল করেছে সেই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের এরূপ স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতিপরায়ণতা, ক্ষমতা অপব্যবহার, একক আধিপত্য ও ঔদ্ধত্যের কারণে নিরুপায় হয়ে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং বিসিবিকে একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে তাহার উপর সম্পূর্ণরূপে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করছি। যেহেতু জনাব ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কর্তৃক মনোনীত পরিচালক হিসেবে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, সেহেতু নিম্ন স্বাক্ষরিত সংখ্যাগরিষ্ঠ পরিচালকগনের অনাস্থা প্রস্তাবটি আমলে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) কর্তৃক জনাব ফারুক আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করতঃ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে আকুল আবেদন করছি। এ বিষয়ে নিম্ন স্বাক্ষরকারীগনের পক্ষ হতে আপনার দপ্তরকে যথাসাধ্য সহযোগিতা প্রদানে আমরা বদ্ধপরিকর থাকিব।

 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!