রজনী ঘোষ লেনেই পড়ে আছে পাথরটি, ছবি তুলছেন উৎসুক জনতা

পাথরটিকে দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা
পাথরটিকে দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা  © টিডিসি

রাজধানীর পুরান ঢাকায় ভাঙারি পণ্যের ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে সেই পাথরটিরকে দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।গত বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে সোহাগকে (৩৯) জনসমক্ষে পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে বুক ও মাথা থেঁতলে দিয়ে হত্যা করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর  শুক্রবার (১১ জুলাই) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ও দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। পরে ১৯ জনের নামে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের বোন। এখন পর্যন্ত মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার পরই যুবদল, ছাত্রদলের বেশ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়।

এ ছাড়াও দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এদিনই বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিটফোর্ড এলাকার ৪ নম্বর রজনী ঘোষ লেনে ভাঙারির ব্যবসা করতেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোহাগকে হত্যা করা সেই পাথরটি মিটফোর্ড এলাকার ৪ নম্বর রজনী ঘোষ লেনে পড়ে রয়েছে। প্রতিনিয়ত পাথরটি দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয় ও উৎসুক জনতা। তবে কেউ হত্যার বিষয়ে মুখ খুলছেন না। এ ছাড়া কেউ কেউ সেই পাথরে ছবি তুলছেন।

সোহাগকে হত্যার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটসংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে থাকা রাস্তায় অর্ধবিবস্ত্র হয়ে শুয়ে পড়ে আছে সোহাগ। তখন তার শুধু নিঃশ্বাসটুকু চলছিল। এ সময় রাস্তা থেকে একটি বড় কংক্রিটের অংশ হাতে তুলে নেয় হালকা আকাশি রঙের শার্ট এবং জিন্সের প্যান্ট পরিহিত রিয়াদ। মাথার ওপরে কংক্রিটের অংশ তুলে সজোরে কোমর আর বুকের মাঝখানে আঘাত করে সে। এ সময় সোহাগ দুই হাত আর দুই পা ছড়িয়ে দিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে।

এরপর একদম বুক বরাবর আবার আঘাত করে। তখন গোল গলার টি-শার্ট আর গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহিত সজীব একপাশ থেকে হেঁটে এসে আরেকটা বড় কংক্রিটের অংশ মাথায় তুলে একদম মুখের মধ্যে আঘাত করে। এরপর আরেকটি ইট নিয়ে এসে মাথায় আঘাত করে ছোট মনির, পাশ থেকে আবার মাথায় আঘাত করে লম্বা মনির, আর তাদের ইট এগিয়ে দেয় নান্নু।

এভাবে বারবার মারতে মারতে মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় সোহাগের। আর এই পুরো হামলা এবং হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেন মহিন এবং অপু দাস। মাথা থেঁতলে মৃত্যু নিশ্চিত করা ছোট মনির মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী, নান্নু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার এবং বড় মনির, রিয়াদ ও সজীব যুবদল নেতা মহিনের কর্মী।


সর্বশেষ সংবাদ