ধলেশ্বরীতে ফেরি থেকে ৫ যানবাহন নদীতে: সাড়ে চার ঘণ্টা পর ৩ মরদেহ উদ্ধার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ AM
নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে ফেরি পারাপারের সময় ট্রাকের ধাক্কায় পাঁচটি যানবাহন নদীতে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় নিখোঁজ তিনজনেরই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর তল্লাশি শেষে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে নদী থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। এর আগে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, সিঙ্গাপুরপ্রবাসী মাসুদ রানা (৩০), মোটরসাইকেল আরোহী মো. রফিক (৩৫) ও ভ্যানচালক স্বাধীন (২৫)। এদের মধ্যে মাসুদ রানা বক্তাবলী ইউনিয়নের গোপালনগর এলাকার আতাউর সরদারের ছেলে। তিনি মাত্র এক মাস আগে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছিলেন।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার পরপরই গুরুতর আহত অবস্থায় রফিককে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, নদী থেকে নিখোঁজ বাকি দুজনকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অভিযান শুরু করে। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর মাসুদ ও স্বাধীনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসুদের মরদেহটি ফেরির প্রপেলারে আটকে যাওয়ায় মারাত্মকভাবে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল।
বক্তাবলী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রকিবুজ্জামান জানান, ফেরিটি পূর্ব ঘাট থেকে পশ্চিম ঘাটের দিকে যাওয়ার সময় মাঝনদীতে একটি ট্রাক হঠাৎ সচল হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাকটি ফেরিতে ওঠার সময় ‘গিয়ারে’ রাখা ছিল, যা হঠাৎ চালু হয়ে যাওয়ায় চালক আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। ট্রাকটি সজোরে সামনের একটি মোটরসাইকেল, দুটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি ভ্যানগাড়িকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেয় এবং নিজেও তলিয়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মো. হাসিনুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'মাসুদ নারায়গঞ্জে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাসুদ দুর্ঘটনার শিকার হন। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ ট্রাকচালকই বলতে পারবেন। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই তিনি পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। ঘাতক ট্রাকচালককে খুঁজে বের করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।'
নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে এবং এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।