ঢাবির এক সময়ের মেধাবী ছাত্র জামশেদ এখন বদ্ধপাগল
- আব্দুল্লাহ আল মামুন (সোহান), যশোর
- প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৫ PM , আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৪৫ PM
পরনে নোংরা ও ছেঁড়া বস্ত্র। কোনো রকম লজ্জা স্থান ঢেকে আছে। পাকা দাড়ি, দীর্ঘাকারের গোঁফ নুইয়ে পড়ছে গাল। সারা দিন কাগজের টুকরো কুড়িয়ে কী যেন খুঁজে বেড়ান তিনি। অথচ তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের প্রখর মেধাবী ছাত্র। দরিদ্র পরিবারের সন্তান শেখ জামশেদ আলী স্কুলে পড়াকালীন একই শ্রেণিতে পড়ুয়া বন্ধুর বাসায় গৃহশিক্ষকের পাশাপাশি লেখাপড়া করতেন। এর বাইরে একই ক্লাসের বন্ধুদের প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ চালাতেন।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার জয়পুর গ্রামের মৃত শেখ আব্দুল মালেকের ছেলে জামসেদ আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান। স্বজনরা বাড়িতে এনে সুস্থ করার প্রাণপণ চেষ্টা করলেও জামশেদ আলী আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেননি। স্বজনদের শত চেষ্টা বিফলে যায়। ছাত্রজীবনে কোনো ধরনের নেশায় আসক্ত না থাকা জামশেদ আলী মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিছুদিন পরপর বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। স্বজনরা খুঁজে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার পর বর্তমানে তিনি রাস্তায় রাস্তায় ভবঘুরে উন্মাদ হয়ে ঘুরে বেড়ান।
জামশেদর স্কুল ও কলেজজীবনের বন্ধু প্রাক্তন এপিপি অ্যাডভোকেট বশির আহম্মেদ খান বলেন, ১৯৯১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে ৭৮৮ নম্বর পেয়ে উপজেলা পর্যায় প্রথম হন জামশেদ। কিছু নম্বরের জন্য যশোর বোর্ডে মেধাতালিকায় স্থান পাননি। এইচএসসি পরীক্ষাতেও তিনি স্টার মার্ক পেয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৩-৯৪ সেশনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এরপর সে পাগল হয়ে যান।
জামশেদ আলী ছোট ভাই শেখ মোশাররফ হোসেন জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে তার ভাইকে সুস্থ করতে অনেক ডাক্তার-কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু তার ভাই আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেননি। সর্বশেষ পাবনা মানসিক হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ভাই সব সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলায় সেখানে ভর্তি করাতে সমস্যা হয়। তিনি ভাইকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।