যুক্তরাষ্ট্র থেকে শেকলে বাঁধা অবস্থায় দেশে ফিরলেন আরও ৩১ বাংলাদেশি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৩ AM
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩১ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের প্রয়োজনীয় জরুরি সহায়তা ও পরিবহন নিশ্চিত করা হয়।
ফেরত আসা ৩১ জনের মধ্যে অধিকাংশ নোয়াখালীর বাসিন্দা। এছাড়া সিলেট, ফেনী, শরীয়তপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার কর্মী রয়েছেন। তাদের সকলকে প্রায় ৬০ ঘণ্টা ধরে হাতে হ্যান্ডকাফ ও শরীরে শেকল পরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আনা হয়। ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাদের হ্যান্ডকাফ ও শেকল তুলে দেওয়া হয়। চলতি বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো মোট ২২৬ জন বাংলাদেশি একই প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন।
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান জানান, ফেরত আসা এই ৩১ জনের মধ্যে অন্তত সাতজন ব্রাজিলে কাজের অনুমোদন নিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর তারা মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে বসবাসের জন্য আবেদন করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মার্কিন প্রশাসন তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন: এক্স-কে ১৪০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা, সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
শরিফুল হাসান প্রত্যাবাসনের এই প্রক্রিয়াকে ‘অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “নথিপত্রহীন কাউকে ফেরত পাঠানো স্বাভাবিক হলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাতে হাতকড়া ও পায়ে শেকল পরিয়ে রাখা অমানবিক।”
তিনি আরও বলেন, ব্রাজিলে কর্মীর নামে পাঠানো ব্যক্তিদের বেশিরভাগই মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। এ জন্য একজন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে, কিন্তু ফিরছেন শূন্য হাতে। এ ধরনের অবৈধ প্রক্রিয়ায় জড়িত এজেন্সি ও অনুমোদন প্রক্রিয়ার যারা ছিলেন তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া নতুন করে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর আগে সরকারের সতর্ক হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
জানা গেছে, ডনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় একাধিক দফায় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এর আগে চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৩৯ জন এবং ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন।