বাকৃবিতে শাস্তি পাওয়া গণঅভ্যুত্থানবিরোধী ৩১ শিক্ষার্থীর নাম-ঠিকানাসহ বিজ্ঞপ্তি জারি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী ৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মেধ্যে ৩১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। তার নামসহ বিস্তারিত তথ্য এবং শাস্তির ধরণ নিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যখন ছাত্র ও শিক্ষকরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-এর অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতীকী প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছিলেন, ঠিক সেই সময় কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘শান্তি মিছিল’ এর নামে একটি সন্ত্রাসী মিছিল আয়োজন করেন। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি নজীরবিহীন ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। 

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তথাকথিত এ সন্ত্রাসী মিছিল থেকে গণতন্ত্রের পক্ষে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর হামলা করে, একজন শিক্ষার্থীকে মারাত্মকভাবে আহত করে, ফলে তাকে পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষের শিক্ষকরা শহীদ মিনারে যখন মৌন মিছিল পরবর্তী সমাবেশ করছিলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তখন সেখানে গিয়ে শিক্ষকদেরকে হামলা করে। 

তারা শিক্ষকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, এক দফার আন্দোলন করলে চোখ তুলে নেয়া এবং সর্বোপরি ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। উক্ত মিছিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্ত ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ‘সারা বাংলায় খবর দে, এক দফার কবর দে’সহ বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমূলক শ্লোগান দেওয়া হয়। তারা উক্ত সন্ত্রাসী মিছিলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শত শত ছাত্র-জনতার খুনি ফ্যাসিস্ট সরকার ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমর্থনে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ স্লোগান দিয়ে জুলুম, নির্যাতন ও হত্যার সমর্থন প্রদান করেন।

আরও পড়ুন: বাকৃবিতে গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী ৫৭ শিক্ষকসহ ১৩৩ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত নিহত সব শহীদদের আত্মাকে উপহাস করেন তারা। সন্ত্রাসী মিছিল থেকে নিরীহ শিক্ষকদের ওপর হামলা, নিরীহ ছাত্রকে মারাত্মকভাবে আহত, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করে ভীতির সৃষ্টি, হুমকি প্রদান, শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ নষ্ট করার মতো শাস্তিমূলক অপরাধ সংঘটিত হয়। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদেরকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। 

এছাড়া সম্মিলিতভাবে শিক্ষার্থীদেরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তদন্ত কমিটি কর্তৃক উক্ত ঘটনায় প্রদত্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত বোর্ড অভ রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির জরুরি সভার সুপারিশ ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩২৮তম অধিবেশনে গৃহীত ৮ এর (ii) নম্বর সিদ্ধান্তমূলে অনুমোদনের প্রেক্ষিতে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে ৩১ জন ছাত্রকে শাস্তি দেওয়া হলো।

শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত দেখুন বিজ্ঞপ্তিতে:


সর্বশেষ সংবাদ