একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যাওয়ার গুঞ্জনে গুচ্ছে ভাঙনের শঙ্কা, দ্বিধায় নতুন উপাচার্যরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ AM , আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ PM
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। আরও অন্তত তিন থেকে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় বেরিয়ে যেতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। ফলে ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ থাকছে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিষয়টি এখনও দ্বিধায় রয়েছে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যরা।
সূত্র জানায়, গুচ্ছের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র একটিতে আগের সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য রয়েছেন। বাকি সবাই নতুন হওয়ায় গুচ্ছ ভর্তির পরীক্ষার বিষয়ে খুব বেশি ধারণা নেই। ফলে চলমান ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বাকি কার্যক্রম চালিয়ে নিতে এখনও কাউকে দায়িত্ব দিতে পারেননি তারা। এরই মধ্যে নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে অন্তত চারজন উপাচার্য ছাড়াও ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের। তারা প্রায় সবাই গুচ্ছের বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না বলে জানিয়েছেন। এমনকি চলমান ভর্তি পরীক্ষার বাকি কাজ কে সম্পন্ন করবেন, তাও জানাতে পারেননি।
যদিও গুচ্ছের বিষয়ে এখনও কোনও সভায় বসেনি কর্তৃপক্ষ। ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আর চলমান ভর্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে কয়েকদিনের ভেতরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তখন পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে উপাচার্যদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিষয়গুলো আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
গত এক সপ্তাহে অন্তত চারজন উপাচার্য ছাড়াও ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের। তারা প্রায় সবাই গুচ্ছের বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না বলে জানিয়েছেন। এমনকি চলমান ভর্তি পরীক্ষার বাকি কাজ কে সম্পন্ন করবেন, তাও জানাতে পারেননি। সর্বশেষ দায়িত্বে ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তবে এ দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য আসার পর আর কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এরইমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরবর্তী ভর্তি কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় গুচ্ছে ভাঙনের শঙ্কা জোরালো হয়েছে। একজন উপাচার্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অন্তত তিন-চারটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘আমাদের অধিকাংশ উপাচার্য নতুন। ফলে গুচ্ছ নিয়ে তেমন ধারণা নেই সবার। এতে কিছুটা জটিলতা আছে। তবে বিষয়গুলো নিয়ে তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা চলছে।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের আরও একটি বিষয় মনোনয়ন দেওয়া হবে। তবে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গুচ্ছের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর। এরপর ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্য আসন আরেকটি মনোনয়ন দিয়ে পূরণ করা হবে। এর মাধ্যমে শেষ হবে গুচ্ছের এ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া। এরপর উপাচার্যরা বসে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরো পড়ুন: ঢাবি-রাবিসহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত, বাকিগুলোর কবে
যদিও ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ থাকবে কিনা, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে কেউ কিছু বলেননি। এ বিষয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গুচ্ছের ভর্তি প্রক্রিয়া এখনও চলমান আছে। আরেক ধাপে ভর্তি নেওয়া হবে। এরপর হয়তো সবাই মিলে বসে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ডিসেম্বরের মধ্যেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।
এতদিন গুচ্ছে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে উপাচার্যের নেতৃত্বে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন। গত ২১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে। নভেম্বরে ভর্তি পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে দাবি জানিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।