পাবলিকে আসন পাবেন না এক লাখ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন পাবে না জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন পাবে না জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সদ্য ঘোষিত ফলাফলে ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন শিক্ষার্থী পাস করেছেন। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। অথচ দেশের শীর্ষস্থানীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল মিলিয়ে আসন রয়েছে ৮০ হাজারের মতো। সে জিপিএ-৫ ধারী অন্তত এক লাখ শিক্ষার্থী এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন পাবেন না।

অবশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় আসন রয়েছে পাঁচ লাখের বেশি। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যর হিসাবে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ পাবেন সবাই। তবে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য হবে তীব্র লড়াই। এ ছাড়া স্নাতক পর্যায়ে দেশে প্রায় ১৩ লাখ আসন আছে। ফলে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী না পাওয়ায় প্রায় আড়াই লাখ আসন ফাঁকা থেকে যাবে।

জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানে ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের মূল টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার। তবে এসব প্রতিষ্ঠানে আসন মাত্র ৮০ হাজার। অথচ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীই এক লাখ ৭৬ হাজার। সে হিসেবে প্রায় এক লাখ জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী পাবলিকে আসন পাবে না।

শুধু তাই নয়, জিপিএ-৫ পাওয়া অনেকেও ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পাবেন না। কম জিপিএ নিয়েও অনেকে পাবলিকে চান্স পাবেন। ফলে সুযোগ না পাওয়া জিপিএ-৫ ধারীর সংখ্যা বাড়বে। তবে তাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজে ভর্তির সুযোগ থাকবে। অনেকে দেশের বাইরেও পড়াশোনো করতে যাবেন।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আসন রয়েছে ৬০ হাজারের বেশি। পাশাপাশি মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন প্রায় ১৮ হাজার। সবমিলিয়ে ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন প্রায় ৮০ হাজার। ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ৪ হাজার ৩৫০ ও বেসরকারি ৭২টি মেডিকেল কলেজে ৬ হাজার ৪৮৯টি আসন রয়েছে।

এর বাইরে চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৭২০, ছয় টেক্সটাইল কলেজে ৭২০, সরকারি ও বেসরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠানে আসন আছে ৫ হাজার ৬০০। আর ১৪টি মেরিন অ্যান্ড অ্যারোনটিক্যাল কলেজে ৬৫৪টি আসন রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন প্রায় সাগে ৫ লাখ। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার। 

এদিকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মাত্র ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, আমরা চাই একটাই ভর্তি পরীক্ষা হোক। তবে এ পদ্ধতিতে যতদিন যেতে না পারি সে পর্যন্ত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাকে আরও কিভাবে ভালো করা যায়। সেদিকে নজর আমাদের।

আরো পড়ুন: বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা শুরু ২০ মে

গত বুধবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এবারও গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনুরোধ করবো যে এইচএসসি সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে সে সিলেবাসে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক। 

দীপু মনি বলেন, একই বিষয়ে বার বার পরীক্ষা হওয়া উচিত না। যেমন ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা, গণিত বা ইংরেজি বিষয়ে নির্দিষ্ট নম্বরে পরীক্ষা হওয়া উচিত। আমরা চাই একটাই পরীক্ষা হোক। যতদিন না হয় ততদিন চলমান গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষাটা আরও কীভাবে ভালো করা যায় তার জন্য কাজ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পর্যাপ্ত আসন রয়েছে। গত কয়েক বছরের মতো আসনের সংকট থাকবে না। দেশে স্নাতক পর্যায়ে সব মিলিয়ে ১৩ লাখের বেশি আসন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। দুই হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে ও ৯ হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা হয়। এ বছর পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।


সর্বশেষ সংবাদ