সাগরে ঝোড়ো হাওয়া, চার বন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৮ AM
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। ফলে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দক্ষিণ ওডিশা–উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় নিম্নচাপটির অবস্থান রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ৫২৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকাল নাগাদ দক্ষিণ ওডিশা ও উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এ কারণে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা দমকা হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময় সাগর উত্তাল থাকবে বলে জানানো হয়।
ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে বিচরণ না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা শুক্রবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয় এবং সন্ধ্যায় নিম্নচাপে রূপ নেয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল যে এই লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যার নিয়মিত আবহাওয়া বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণও হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী, বগুড়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলা এবং রংপুর ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা প্রশমিত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সৈয়দপুরে, যেখানে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বান্দরবানে ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।