নিম্নচাপের প্রভাবে চরফ্যাশনে ৯০ কোটির ক্ষয়ক্ষতি, বিপর্যস্ত ৩০ হাজার মানুষ
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৬:৪৯ PM , আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫, ১২:২৪ PM
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র সামনে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের প্রবল জলোচ্ছ্বাস ও নদীভাঙনে ঢালচর, চরনিজাম, কুকরী-মুকরী, চরপাতিলা ও মুজিব নগরসহ অন্তত চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
নদীর পানির উচ্চতা ৭-৮ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে জনপদ। হানায় পড়েছে বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষিজমি ও মাছের ঘের। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ (পাউবো) এর উপ-প্রকৌশলী আহসান আহম্মেদ বলেন, নদীর পানি বিপদসীমা না ছুঁলেও হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের খেজুরগাছিয়া বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধ মেরামতের জন্য জরুরিভিত্তিতে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুর্যোগে ২,৯৮৮টি গবাদি পশু মারা গেছে এবং ১৩ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়েছে। মৃত পশুর ক্ষতি প্রায় ২০ লাখ টাকা এবং অবকাঠামোগত ও খাদ্য খাতে আরও ২৯ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি খাতে ৪ কোটি টাকার ক্ষতির হিসাব দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। এর মধ্যে ৩৪ হেক্টর বীজতলা, ১০৫ হেক্টর সদ্য রোপিত আউশ ধান ও ১৪৪ হেক্টর শাকসবজির জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার কৃষক।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, মৎস্য খাতে ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ১২০টি মাছের ঘের ও ১,২০০টি পুকুর-দীঘি প্লাবিত হয়ে ১৮ লাখ পোনা ও ১৫৩ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২টি মৎস্য নৌযানও।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, ঢালচর, চরনিজাম, চরকুকরি-মুকরি, চরপাতিলা ও মুজিব নগরসহ বিভিন্ন গ্রামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ তিন শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল থেকে এসব প্রতিষ্ঠানকে টিন প্রদান করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে জরুরি সহায়তা হিসেবে ৪০ বান টিন, শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় কাপড় বিতরণ করা হয়েছে। তবে প্রাণিসম্পদ, কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সরকারি বরাদ্দ নির্ধারণ হয়নি।