হলে মধ্যরাতে ঢাবি ছাত্রদের ‘সিট চাই’ বলে স্লোগান

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হল
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হল  © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তারা বর্তমানে হলের দুটি বর্ধিত ভবনের গণরুমে থাকছেন। ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তারা নিয়মিত বাধ্যতামূলকভাবে অংশ নিচ্ছেন। এর বিনিময়ে তাদের গণরুম থেকে হলের বিভিন্ন কক্ষে ‘শিফট’ করার কথা জাহিদুল ইসলামের। কিন্তু তিনি তা করছেন না। বেশ কয়েকবার এ বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেও কাজ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই তারা কিছুদিন পরপর ‘এক দফা এক দাবি, সিট চাই সিট চাই’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এতেও কোনো ফল হচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ গুচ্ছের ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন শুরু কবে

জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহীদুল্লাহ্‌ হলের দ্বিতীয় বর্ষের কয়েক শিক্ষার্থী আসনের জন্য বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা ‘এক দফা এক দাবি, সিট চাই সিট চাই’, ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, সিট আমার অধিকার’ বলে স্লোগান দেন। এর আগেও একই দাবিতে দুই দফায় বিক্ষোভ হয়েছে। 

তবে প্রশাসনিকভাবে অন্য কারও হল নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই—এমন দাবি করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ মুহাম্মদ জাবেদ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকেই এলাকার “বড় ভাই” বা পরিচিতদের মাধ্যমে হলে আসন বরাদ্দ পাওয়ার আগেই থাকা শুরু করে দেন। অনেকে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসেন। ঢাকায় থাকার সামর্থ্য থাকে না। আমরা তো তাদের বের করে দিতে পারি না। আসন বরাদ্দ পাওয়ার পর হলে ওঠার নিয়ম থাকলেও অনেকেই ওঠার পরে আবাসিক হন। এখন তাদের কে কোন সংগঠন করে বা কী করে, তা তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না৷ হলে আসনসংখ্যা ১ হাজার ২৮৮, কিন্তু থাকেন আরও বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিনিয়রদের অনেকে হলে আছেন। মানবিক বিবেচনায় তাদের একটু সময় দিতে হয়। তবে সিটসংকট দ্রুতই কেটে যাবে।’

এদিকে গণরুমব্যবস্থায় এক কক্ষে অনেক শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। কোনো কোনো গণরুমে এক কক্ষে ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে থাকতে হয়। গণরুমে থাকতে হলে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের (বর্তমানে ছাত্রলীগ) রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হয়। সপ্তাহে চার থেকে ছয় দিন ছাত্রলীগের প্রতিটি পক্ষ নিজেদের নিয়ন্ত্রিত কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের গেস্টরুমে ডেকে নেওয়া হয়। গণরুমে রেখে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিজেদের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য করেন তারা। কেউ তাদের তৈরি এই নিয়মকানুনের অবাধ্য হলে বা কর্মসূচিতে অংশ না নিলে তাঁর ‘বিচার’ হয় গেস্টরুমে। গণরুম-গেস্টরুমকে কেন্দ্র করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি আবর্তিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮টি আবাসিক হল আছে। এর মধ্যে ১৩টি ছাত্রদের জন্য আর বাকি ৫টি ছাত্রীদের জন্য।


সর্বশেষ সংবাদ