অপশক্তিরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে মসনদে বসতে চায়: রাবি ভিসি

শিক্ষক সমাজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন
শিক্ষক সমাজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন  © ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, অপশক্তিরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে মসনদে বসতে চায়। কেননা যে অপশক্তি বঙ্গবন্ধুরকে ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, এখন তারা দেশনেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করতে চায়।

রবিবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় প্যারিস রোডে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন তিনি।

গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, সেই দেশবিরোধী হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। এখনও আহত অনেক মানুষ গ্রেনেডের স্প্রিন্ট শরীরে বহন করে বেড়াচ্ছে। ভাগ্যগুণে সেই হামলায় দেশনেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মেরে ফেলার পায়তারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অথচ দেশে উন্নয়নের অগ্রগতি শেখ হাসিনার হাত ধরেই হয়েছে। তাই বাংলাদেশ রক্ষা করতে হলে দেশনেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে।

এসব অপশক্তিকে দমন করার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, এসব অপশক্তিকে লালন করে দেশের বিরোধীদলসহ কিছু রাজনৈতিক দল। যারা গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। কারণ তারা জানে দেশের মানুষ তাদের সাথে নেই। বর্তমান সরকারের উচিত, খুবই কঠোর হস্তে এইসব অশুভ শক্তিকে দমন করা, যাতে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এবং একুশে আগস্টের মতো কালো দিন বাংলাদেশকে আর যেন কলঙ্কিত করতে না পারে।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম বলেন, ২১ আগষ্ট সে সময়ের সরকার তাদের বিরোধীদের উপর যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় তার নিন্দা দেশের প্রতিটি মানুষ জানায়। বাংলাদেশ দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা বিরোধীরা এখন পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে দেশে আরও অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশের মানুষকে বিপদে ফেলা যায়। তারা এখনও বিভিন্ন কর্মকাণ্ড দিয়ে দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ ২১ আগষ্ট এর গ্রেনেড হামলা। আমাদের সকলকেই দেশবিরোধী এই শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত। আমরাই বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্নের দেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, অধ্যাপক প্রভাষ কর্মকার, অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস, অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান প্রমুখ।

এদিকে ২১ আগস্টে দেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার দিবসকে ঘিরে আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গ্রেনেড হামলার বিভীষিকাসয় ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন আলোচকগণ।

বক্তারা বলেন, গ্রেনেড হামলায় ঘাতকচক্রের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেওয়া। পরিশেষে দেশে স্বৈশাসন ও জঙ্গীবাদকে প্রতিষ্ঠা করা। এ হামলায় শেখ হাসিনা সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন দলের ২৪ নেতৃকর্মী এবং পঙ্গুত্ববরণ করেন অনেককে। 

তাঁরা আরো বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধ চক্র এখনো নানানভাবে সোচ্চার আছে। এই অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

সভায় অনুষদ অধিকর্তা, ইনস্টিটিউট পরিচালক ও বিভাগীয় সভাপতি, হল প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর প্রদীপ কুমার পাণ্ডে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সমাবেশ দেশদ্রোহী ঘাতকচক্রের নির্মম গণহত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া সেই ঘাতক চক্রের বিচার এবং তাদের মদদপুষ্টদের কঠোর হস্তে দমন করার আহ্বান জানান বক্তারা। এমনকি এসব অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দেশনেত্রী হাত শক্তিশালী করার পাশাপাশি সোনার বাংলা গড়ায় বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বলে জানান তারা।

সমাবেশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেন প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 


সর্বশেষ সংবাদ