প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে চবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ PM , আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩০ PM
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামি শিক্ষা যুক্ত করার দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার চত্বরে ইসলামিক স্টাডিজ অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত এ মানববন্ধনে অংশ নেন বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো প্রাথমিক শিক্ষায় দ্রুত ‘ধর্মীয় শিক্ষক’ নামে একটি স্বতন্ত্র পদ সৃষ্টি করে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে; সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের পাশাপাশি নুরানি পদ্ধতিতে আরবি বর্ণমালা ও সহিহ কোরআন তেলাওয়াতের প্রাথমিক জ্ঞান বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; এসএসসি ও এইচএসসিতে বিভাগীয় বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলাম শিক্ষা বিষয় যুক্ত করতে হবে; দেশের স্থিতিশীলতা, শান্তি ও সার্বিক অগ্রগতির স্বার্থে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের মতো স্বতন্ত্র ইসলাম শিক্ষা কোর্স অপশনাল (ঐচ্ছিক) হিসেবে সংযোজন করতে হবে; আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এক বছরের ‘ডিপ্লোমা ইন ইসলামিক স্টাডিজ’ কোর্স চালু করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘৯০ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হওয়া সত্ত্বেও এ দেশে মুসলিমদের নানাভাবে কোণঠাসা করে রাখতে চায় একটি চক্র। নৈতিকতা ও মানবিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ হতে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার সর্বস্তরে অতিসত্বর ইসলামি শিক্ষা সংযুক্ত করতে হবে। সরকার এ দাবি না মানলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।’
চাকসুর সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক জিহাদ আফনাফ বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন প্রতিটি সেক্টরে কাজ করছে, কিন্তু ইসলাম শিক্ষা নিয়ে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা ইসলামি দেশ হয়েও ইসলামিক শিক্ষাকে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিচ্ছি না। এ কারণেই সমাজে মূল্যবোধের শিক্ষা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নৈতিকতা ও আদর্শ গঠনের সুযোগ পাবে।’
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. এনামুল হক বলেন, ‘ইসলাম শিক্ষাকে উৎখাত করার চেষ্টা বহু আগে থেকেই চালানো হয়েছে, বিশেষ করে ব্রিটিশ আমলে। স্বাধীনতার পরও ইসলামি শিক্ষা বা আরবি নামের কারণে এ শিক্ষাকে সংকুচিত করা হয়েছে। এখন কিছু অনুষ্ঠানে বা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থায় ইসলাম শিক্ষাকে সামান্যভাবে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে, কিন্তু সেটি যথেষ্ট নয়। ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
তিনি বলেন, প্রশাসন নানা সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।