এমন সংবিধানের স্বপ্ন দেখি যেখানে কোনো বোনকে স্বামীর জন্য কাঁদতে হবে না: অ্যাটর্নি জেনারেল

বক্তব্য রাখছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান
বক্তব্য রাখছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান  © টিডিসি

অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, আমরা এমন একটি সংবিধানের স্বপ্ন দেখি যে সংবিধানে আর কোনো মা বোনকে স্বামী-সন্তানের জন্য রাতে অপেক্ষা করতে না হয়। কোনো মা-বোনকে যেন তাহাজ্জুদে বসে কাঁদতে না হয়। আর কোনো কার্টুনিস্টকে যেন জেলে মরতে না হয়।

শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও সাংবিধানিক পুনর্গঠন: তরুণদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সাংবিধানিকভাবে এমন একটি জায়গায় যেতে চাই, যেখানে সকল শহীদের রক্তের মূল্য দেওয়া হবে৷ স্বৈরাচারী সরকারের পতনের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি। আমরা রাষ্ট্রকে একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মাধ্যমে গড়ে তুলব।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের শাসনামলের বিবরণ তুলে ধরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৫ শতাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন, ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এ ছাড়া গত ১৭ বছরে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ নির্বিচারে শহীদ হয়েছেন।

‘৬০ লক্ষ মানুষ বিনাদোষে রাজনৈতিক মামলার স্বীকার হয়েছে যার ৯৯% মামলার বাদি ছিলো পুলিশ। আপনারা গর্বের সাথে বলতে পারবেন গত এক বছরে একটাও গুম হয়নি। জুলাই ও একাত্তর একই চেতনার সাথে সংযুক্ত। জুলাই বিপ্লব উৎসারি হয়েছে ৫২ থেকে’, যোগ করেন তিনি।

মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ৩০ হাজার মানুষকে গুম করেছে। আমরা এই অপরাধের বিচার করতে যাচ্ছি। এই অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় যারাই অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত তাদের বিচারের সম্মুখীন করা হবে। বাংলাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো’ নীতি প্রতিষ্ঠায় যত বাধা বিপত্তি আসুক সব মোকাবিলা করব। জুলাইয়ে শহীদদের রক্তের দাম অব্যশই রাখা হবে। আমি জুলাই চেতনাকে ধারণ করার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলব।
 
সভাপতির বক্তব্যে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, রাষ্ট্রের সকল সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় হলো সুশিক্ষা। শ্রেষ্ঠতম সংবিধান অনেক খারাপ কাজ আটকে দিতে পারে, কিন্তু একটি সুন্দর রাষ্ট্র গঠন করতে পারে না। চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আমাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। নতুন চিন্তাকে ধারণ করতে হলে আমাদের পুরাতন ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে গিয়ে দেখলাম এখানে সবাই পুরাতন ধারাকেই নিজের বোতলে চায়। সবাই চায় আগে ওরা করেছে, আমরাও করব। দেশের প্রতি ভালোবাসার চেতনাকে ধারণ করতে দেশাত্মবোধক গান শোনা লাগে না। আজকের এই অনুষ্ঠানে হার-জিত হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সবাইকে দেশকে ভালোবেসে নিজস্বতা প্রকাশের বদলে কাজ দেখাতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ