ফেসবুকে জাবি ভিসির ‘নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি’ ভাইরাল

  © সংগৃহীত

শিক্ষক-ছাত্র ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অচলাবস্থা চলছে। তবে এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের কোনো প্রত্যক্ষ উপস্থিতি না থাকায় তাঁর নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেয়ালে সাটান শিক্ষার্থীরা। পরে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মূহুর্তেই ভাইরাল হয়।

গতকাল সোমবার (১৫ জুলাই) পোস্টারটি ভাইরাল হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বইছে৷

প্রশাসনের এই দায়িত্বহীনতায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মোড়ে উপচার্যের এই নিখোঁজ সংবাদের পোস্টার টানানো হয়েছে। উপাচার্যকে উপহাস করে গায়েবি জানাজা করার কথাও তুলছেন অনেক শিক্ষার্থী। 

দেওয়ালে সাটানো সেই পোস্টারে বলা হয়, ‘জাবি ভিসি নূরুল আলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী, শিক্ষক,কর্মকর্তা, কর্মচারীদের টানা আন্দোলন চলছে। কিন্তু এতকিছুর মাঝে কোথায় হারিয়ে গেলেন জাবির মহান এই অভিভাবক! কেউ সন্ধান পেলে তাকে ভিসি পুকুরের পাশে অবস্থিত আলিশান বাড়িতে পৌছে দেয়ার অনুরোধ রইলো। সন্ধানদাতাকে জাবিতে হল প্রভোস্টের দায়িত্ব দিয়ে সম্মানিত করা হবে’।

এদিকে গতকাল রাতে আন্দোলনকারী মিছিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় শাখা ছাত্রলীগ। তার বিচার চাইতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানেই হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও ভাড়াটিয়ারা। হামলার এক পর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকে বারবার গেইট খুলে দেওয়ার আকুতি জানান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এতেও নিরব ভূমিকা পালন করেন উপাচার্যসহ দায়িত্বশীল প্রশাসনিক ব্যক্তিরা।

আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা সাতটায় আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী বটতলা এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করা হয়। এর বিচারের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনে আমরা অবস্থান নিই। কিন্তু উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থানকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও তাদের ভাড়া করা গুন্ডাবাহিনীকে আমাদের উপর লেলিয়ে দেয়। 

তারা বলেন, ছাত্রলীগের গুন্ডা বাহিনীর কাছে রামদা, বন্দুক, পেট্রোলবোম ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। একের পর এক আমাদের ওপর কাচের বোতল ছুড়ে মারা হয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সাথে যুক্ত হয় পুলিশবাহিনী। আমাদেরকে একটি বদ্ধ জায়গায় একের পর এক টিয়ারশেল মারে তারা। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বারবার আকুতি জানায় কিন্তু উপাচার্য তার কেচিগেট খোলেনি ।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’

এর আগে, গতকাল রাতে (১৫ জুলাই) দিবাগত রাতে কয়েক দফায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চালায় শাখা ছাত্রলীগ ও তাদের ভাড়াটেরা। পরে আন্দোলনকারীরা ভিসির বাসভবনে ঢুকলে সেখানেও হামলা চালায় আক্রমনকারীরা। এসময় পুলিশ প্রশাসনকে হামলাকারীদের জন্য পথ ছেড়ে দিয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে সব হল থেকে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে বের হয়ে আসেন। তারা হামলাকারীদের হটিয়ে ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভিসির বাসভনে অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এর পর থেকেই উত্তপ্ত জাবি ক্যাম্পাস। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক এবং নারী শিক্ষার্থীসহ কয়েক শত আহত হয়েছেন।

 

সর্বশেষ সংবাদ