রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
হলে পানি গরম করাকে কেন্দ্র করে নির্যাতন, হাসপাতালে ভর্তি ছাত্রী
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৩৫ PM , আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৯ PM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে পানি গরম করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে সাতদিন ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের দোলন নামের এক সিনিয়র শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। নির্যাতন সহ্য না পেরে ভুক্তভোগী ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সুমাইয়া সুলতানা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার দোলন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতির ইন্ধনে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পানি গরম করাকে কেন্দ্র করে সুমাইয়ার সাথে অভিযুক্ত দোলনের কথার কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দোলন রাগান্বিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে অভিযুক্ত দোলন ওইদিন রাতেই হলের দায়িত্বরত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বসেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সবার সামনে ক্ষমা চাইলেও ছাত্রলীগের দায়িত্বরত নেত্রীরা তাকে বিভিন্নভাবে শাসান। এরপর দোলন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি রয়ের সহায়তায় প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
আজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অভিযুক্ত দোলনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হলের প্রভোস্ট ড. ফারজানা কাইয়ুম কেয়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে তাঁর কক্ষে ডাকেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অভিযুক্ত দোলন। আলোচনা চলাকালীন এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেলে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি রামেকের ১৫নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নুরুন্নাহার দোলনকে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বঙ্গমাতা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. ফারজানা কাইয়ুম কেয়া কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র উপদেষ্টা এম. তারেক নূর বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য রামেকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলকেই আমার দপ্তরে ডেকেছি। নির্যাতনের বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবোর্চ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোলনসহ অভিযুক্তদের হল থেকে বহিষ্কারসহ ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সকল শিক্ষার্থী।