‘করোনায় মাস্ক পরে ভাইভা নিতে পারলে নিকাবে সমস্যা কোথায়?’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মানববন্ধনে
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মানববন্ধনে   © টিডিসি ফটো

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বলেছেন, 'আমরা দেখেছি করোনাকালীন সময়ে এবং তারপরে মাস্ক পরে ভাইবা নেয়া হয়েছিল। কই তখন তো কোন সমস্যা হয়নি। এখন কেন সমস্যা হচ্ছে।'

রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সম্প্রতি নিকাব না খোলার কারণে ঢাবির বাংলা বিভাগের এক ছাত্রী ভাইভাতে অংশ নিতে না পারার প্রতিবাদে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। উক্ত মানববন্ধনে এই প্রশ্ন রেখেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাইভা, প্রেজেন্টেশন ও পরীক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের বোরকা-নিকাবকে ফরমাল পোশাক হিসেবে স্বীকৃতির দাবি তুলেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী শনাক্তকরণে নিকাব না খুলে বায়োমেট্রিক বা অন্য কোনো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের দাবিও তুলেছে ধর্মভিত্তিক এই ছাত্র সংগঠনটি।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে হিজাব-নিকাব পরার অভিজ্ঞতা সুখকর নয়

উক্ত মানববন্ধনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মানিক বলেন, এখানে যে যার নিজের মতো সবকিছু পালন করবে, সংবিধান আমাদের সেই অধিকার দিয়েছে। কিন্তু একজন ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে চললে তার সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হবে? ঢাবি প্রতিষ্ঠা হয়েছে মুসলমানদের স্বার্থরক্ষার জন্য। তাহলে এখানে মুসলমানদের কেন আজকে এই অবস্থা?

তিনি বলেন, মেয়েটাকে যে মানসিক নির্যাতন করা হলো তার বিচার করতে হবে। আমাদের দাবি মেয়েটাকে ভাইবায় উপস্থিত দেখাতে হবে। যদি না দেখানো হয় তাহলে আমরা প্রয়োজনে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বো। দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করবো। সবার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা আছে, কিন্তু কোথায় সেই স্বাধীনতা? দাঁড়ি টুপি দেখলেই বলা হয় জঙ্গি, এটা কেমন ধরনের স্বাধীনতা?

মানববন্ধনে সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বলেন,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র। এখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী পর্দা করে এবং বিভিন্নভাবে তাদেরকে হেনস্তা করা হয়। গত ডি ইউনিটের ভাইভা পরীক্ষায় ডিন একজন ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তুমি হিজাব পড়েছো কেন? ওই ছাত্রী উত্তর দিয়েছিল যে, আমার ফ্যামিলির সবাই পরে তাই আমিও পরি। তখন ডিন বলেছিলেন, পরিবারের সবাই যদি জঙ্গি হয় তাহলে তুমিও কি জঙ্গি হবে? এই হলো আমাদের শিক্ষকদের মানসিকতা।

তিনি আরও বলেন, এটি আসলে ইসলামকে হেনস্তা করার একটা কার্যক্রম। এই মেয়েটাকে যে অনুপস্থিত দেখানো হল, তার ভবিষ্যৎ কি হবে? কয়েকদিন আগে হলিক্রস কলেজের একজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিল তাকে নম্বর কম দেয়ার কারণে। এখানেও যদি একইরকম ঘটনা ঘটে তাহলে আমাদের শুধু মায়াকান্না করতে হবে। তাই আমরা দাবি করবো, বৈষম্যমূলক আচরণ দূর করতে হবে এবং বোরকা নিকাবকে ভাইবার ফর্মাল পোশাক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ