সাত কলেজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দাবি, ইউজিসির সঙ্গে যা আলোচনা হলো শিক্ষকদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৪ PM
রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ইউজিসি ভবনে সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা আন্দোলনের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি তুলে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক মাহফিল আরা বেগম বলেন, ‘সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় আমরা ইউজিসির সদস্য তানজিম এবং চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ স্যারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। বৈঠকে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, সাত কলেজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং দ্রুতই বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, সাত কলেজের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা না করে ইউজিসি যদি কোনো একতরফা সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে শিক্ষক সমাজ তা প্রত্যাখ্যান করবে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে আরও একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দাবির অগ্রগতি এবং সম্ভাব্য পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হবে।’
ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করব যাতে শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু থাকে এবং শিক্ষক সমাজ কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বিষয়টি আমরা সতর্কতার সঙ্গে নজরে রাখব।’
আরও পড়ুন: সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর ৭ কলেজের ১৪০০ বিসিএস ক্যাডারের ভবিষ্যৎ কী?
এর আগে দুপুর ১টায় আগারগাঁওয়ে ইউজিসি ভবনের সামনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের সংগঠন ‘বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন’র উদ্যোগে শিক্ষকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দেশের কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা একতরফা ও অপরিকল্পিত। সাত কলেজকে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র অধিভুক্ত করার যে প্রক্রিয়া চলছে, তা বন্ধ করে পৃথক স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার দাবি জানাই।’
তারা আরও বলেন, এ পরিকল্পনার ফলে উচ্চশিক্ষার পরিসর সংকুচিত হবে, নারী শিক্ষায় বাধা তৈরি হবে, এবং এসব ঐতিহ্যবাহী কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো ও দীর্ঘদিনের গৌরবময় ঐতিহ্য বিলুপ্তির মুখে পড়বে।
শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন, সাত কলেজ বহু বছর ধরে রাজধানীর মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার একমাত্র নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে পরিচিত। এই কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য হারালে শুধু শিক্ষাক্ষেত্র নয়, দেশের সামাজিক ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
মানববন্ধনে কবি নজরুল কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজের সহস্রাধিক শিক্ষক অংশ নেন।
বক্তারা আরও জানান, তাদের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছাত্রকল্যাণ, গুণগত উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তা এবং ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর টিকে থাকার স্বার্থে একটি টেকসই ও পরিকল্পিত কাঠামোর দাবি জানানো। তারা বলেন, প্রয়োজন হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।