৭ কলেজের নতুন সংকটের সমাধান কী, বললেন ঢাবি অধ্যাপক মামুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন  © টিডিসি সম্পাদিত

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ আগের মতো কলেজিয়েট বা অধিভুক্ত কাঠামোর আওতায় রাখতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের একাংশের দাবি তাদের নিজস্ব স্বার্থের বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেছেন, ঢাকার সরকারি সাত কলেজ নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক আবারও উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো ও স্বার্থ সংঘাতকে সামনে এনেছে। 

আজ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এসব কথা বলেছেন অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গঠিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র সিদ্ধান্ত বাতিল করে কলেজগুলোকে আগের মতো কলেজিয়েট বা অধিভুক্ত কাঠামোর আওতায় রাখার দাবি তুলেছে মূলত বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের একাংশ। তাদের এ দাবি কেবলই তাদের নিজস্ব স্বার্থের দাবি। এখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ, উচ্চ শিক্ষার মান বৃদ্ধির সাথে কোন সম্পর্ক নেই।

তাঁর মতে, এ শিক্ষকরা চান—সাত কলেজ আগের মতো অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে থাকুক এবং অনার্স-মাস্টার্স স্তরের পাঠদান ও প্রশাসনিক কাজ বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারই পরিচালনা করুক। তাদের আশঙ্কা, বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হলে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা আর এ কলেজগুলোয় থাকতে পারবেন না; ফলে ঢাকায় থাকা, অতিরিক্ত টিউশনি বা প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ সংকুচিত হবে।

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের এ দাবি মূলত শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নয়, বরং নিজেদের পেশাগত অবস্থান রক্ষার স্বার্থে—এমন সমালোচনা উঠছে। কারণ, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের সঙ্গে তাদের দাবির সরাসরি সম্পর্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামোর শিক্ষক হওয়ার জন্য সাধারণত পিএইচডি বা সমমানের গবেষণা ডিগ্রি থাকতে হয়, যা আন্তর্জাতিক মানের স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের মাধ্যমে অর্জন করা হয়। অন্যদিকে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার মূলত কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকতা ও প্রশাসনে নিয়োজিত থাকে।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত কলেজ করার দাবিতে ইউজিসিতে শিক্ষকদের অবস্থান

তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই নানা সমস্যায় জর্জরিত—শিক্ষক সংকট, গবেষণার দুর্বলতা, প্রশাসনিক জটিলতা। সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করলে হয়তো কিছু কাঠামোগত সমস্যা তৈরি হবে, কিন্তু একই সঙ্গে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষায় গবেষণাধর্মী শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনাও তৈরি হবে।

শিক্ষকদের এ দাবির কারণে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নেমে যেতে পারেন—এমন আশঙ্কা অমূলক নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস, পরীক্ষা, রেজাল্টসহ নানা সমস্যা নিয়ে ক্ষুব্ধ। যদি কলেজের কাঠামো নিয়ে আবারও টানাপড়েন শুরু হয়, তাহলে তারা হয়তো আরও কঠোর অবস্থানে যাবে।

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুনের মতে, এ জটিলতার সমাধান হতে পারে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপের মাধ্যমে—যেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষকদের ন্যায্য পেশাগত নিরাপত্তা—সবকিছুর ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর বা অধিভুক্ত কাঠামো যাই হোক না কেন, লক্ষ্য হতে হবে মানসম্মত শিক্ষা, গবেষণার পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে অগ্রাধিকার দেওয়া।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence