আদার যাদুকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা 

আদাতে আছে শক্তিশালী উপাদান
আদাতে আছে শক্তিশালী উপাদান  © প্রতীকী ছবি

রান্নায় প্রায় সারা বছর ব্যবহৃত হয়ে আসা প্রাকৃতিক এক উপকরণ হলো আদা। যা রান্নার স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেহের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। কেননা আদায় থাকা পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি ও সি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এজেন্ট দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ সহায়তা করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ গ্রাম আদায় রয়েছে ৮০ ক্যালরি, পটাশিয়াম ৪১৫ গ্রাম, সোডিয়াম ১৩গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৮ গ্রাম, ফাইবার ২গ্রাম, ফ্যাট ০.২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১ গ্রাম, চিনি ১.৭গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১০%, ভিটামিন-সি ৮%, ভিটামিন-বি ৬১০% ও লৌহ ৩%।  

আরও পড়ুন: এলাচের পুষ্টি উপাদান ও উপকারিতা

অসুস্থ অবস্থায় টোটকা হিসেবেও আদার ব্যবহার বেশ প্রচলিত। বিশেষ করে পেটের সমস্যা, গলা ব্যথা কিংবা ঠাণ্ডা-কাশিতে আদা বেশ কার্যকর। তাই বিভিন্ন গবেষণায় আদার স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা জানা যায়। নিম্নে আদার বিভিন্ন স্বাস্থ্য গুণ তুলে ধরা হলো-

**পেটের সমস্যায় আদা বেশ কার্যকরী একটি উপাদান। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিক, পেটফাঁপা, পেটব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আদার রস পানিতে মিশিয়ে খেলে উপকার মিলে। কারণ এতে থাকা এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাছাড়া মধু ও লেবুর রসের সাথে একত্রে আদার রস গরম পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত সেবনে এমন সমস্যা থেকে দীর্ঘস্থায়ী মুক্তি পাওয়া যায়। 

**খাবারে অরুচি কিংবা ক্ষুধামন্দা সমস্যায় সামান্য লবণ দিয়ে কাঁচা আদা চিবিয়ে আহারে রুচি ফেরার পাশাপাশি ক্ষুধা বাড়ে এবং হজমে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন: রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা

**শরীদের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা বিশেষ করে অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস উপশমের ক্ষেত্রে বেশ উপকারী। কেননা আদায় থাকা ক্যালসিয়াম ও অন্যন্য পুষ্টি উপাদান এসব সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি মধু ও লেবু আদার রস সেবনে এমন ব্যথা থেকে মুক্তি মিলে।

**এজমা কিংবা ফুসফুস সংক্রান্ত সর্দি-কাশি সমস্যায় আদার ব্যবহার অতিপ্রাচীন। তাই মধু ও লেবুর সাথে আদার রস গরম পানি যোগে দৈনিক দুবেলা পান করলে উপকার পাওয়া যায়। 

**আদা বমি বমি ভাব দূর করতে সহায়তা করে। তাই পানিতে আদার রস মিশিয়ে খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়। এমনকি দেহে হালকা জ্বর জ্বর ভাব থাকলেও একই উপায়ে মুক্তি পাওয়া যায়।

**মাইগ্রেন, সাইনাস, গলা ও মাথাব্যথা সমস্যার ক্ষেত্রে আদার জুড়ি নেই। কেননা কাঁচা আদা সামান্য লবণ দিয়ে চিবিয়ে খেলে এসব ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি মিলে। তবে দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির জন্য নিয়মিত লেবু ও মধুর সাথে পানিতে মিশিয়ে আদার রস সেবন করতে হবে।

**আদা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। কারণ আদায় ক্ষতিকারক কোন কোলেস্টেরল নেই। চর্বির উপাদানও খুবই কম। তাই মধু যোগে আদার সেবনে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ জনিত কোন সমস্যা না থাকলে আদা হার্টের জন্যও উপকারী। 

**আদা পাকস্থলী ও লিভারের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে। সেক্ষেত্রে আদা, মধু ও আমলকীর গুড়া একত্রে মিশিয়ে দৈনিক চা-হিসেবে পান করতে হবে।

**আদার মতো খোসাতেও স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। ইতালি’র ‘ইউনিভার্সিটি অফ কালাব্রিয়া’র ফার্মেসি হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের করা গবেষণায় দেখা গেছে, আদার খোসা খাওয়া কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। 

আরও পড়ুন: ডাবের পানির স্বাস্থ্য উপকারিতা

তবে অতিরিক্ত আদা সেবনে বাড়তে পারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আদা খাবারকে দ্রুত বর্জ্যে পরিণত করে। তাই এটা বেশি পরিমাণে সেবন করলে তা ডায়রিয়ায় রূপ নিতে পারে। এছাড়া আদাতে রয়েছে ‘অ্যান্টি প্লাটিলেট’ উপাদান। তাই অতিরিক্ত আদা খাওয়া রক্তপাত ঘাটায়। এমনকি লবঙ্গ বা রসুনের সঙ্গে আদা গ্রহণে অতিরিক্ত রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া আদাতে আছে শক্তিশালী উপাদান। যা খালি পেটে খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে হজমে সমস্যা তৈরির পাশাপাশি আদা পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।  

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ হেলথের তথ্য অনুযায়ী, দৈনিক ১৫ গ্রামের বেশি আদা খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া স্বরূপ হজমে সমস্যা ও পেটফোলা ভাব দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে আদা সেবনে মধু কম খাওয়ার কথা বলা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence