এআইয়ের কারণে অনেক চাকরি হারিয়ে যাওয়া অবশ্যম্ভাবী, কারা নিরাপদ—জানালেন অল্টম্যান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২২ AM
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কর্মক্ষেত্রে বড় ধরনের রূপান্তর ঘটাবে বলে মনে করছেন ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান। তার মতে, এই পরিবর্তনের প্রথম আঘাত আসবে গ্রাহকসেবা খাতে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দ্য টুকার কার্লসন শোতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অল্টম্যান বলেন, বর্তমানে ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিচালিত বিপুল গ্রাহকসেবার একটি বড় অংশ অচিরেই এআই আরও দক্ষভাবে সম্পন্ন করবে। ফলে এ খাতে বহু কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন।
অল্টম্যানের ধারণা, গ্রাহকসেবার পর প্রোগ্রামাররাও এআইয়ের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তিনি বলেন, ইতিহাসে দেখা যায় প্রায় প্রতি ৭৫ বছরে চাকরির ধরণে বড় রদবদল ঘটে, যার ফলে অর্ধেক পেশা রূপান্তরিত হয়। তবে এবার পরিবর্তনটা অনেক দ্রুত আসবে, একে তিনি বলছেন আকস্মিক ভারসাম্য পরিবর্তনের মতো। তবে পরিবর্তন মানে মানুষের পুরোপুরি অনুপস্থিতি নয়। তার মতে, কলসেন্টারের মতো খাত দ্রুত বদলে যাবে, যদিও আগে ধারণা ছিল মানুষ একসময় পুরোপুরি প্রতিস্থাপিত হবেন। কিন্তু মানুষের আবেগ, সহমর্মিতা ও প্রত্যক্ষ সংযোগ যেখানে জরুরি, যেমন নার্সিং, সেখানে মানুষকে সরানো সম্ভব নয়। অল্টম্যান বলেন, যতই এআই বা রোবট উন্নত হোক, রোগী বা দুর্বল মানুষ শেষ পর্যন্ত আশ্বাস চাইবেন মানুষের কাছ থেকেই।
তার এ মন্তব্য নতুন কিছু নয়। গত বছর ওরাকল ঘোষণা দিয়েছিল তারা গ্রাহকসেবার সবকিছু স্বয়ংক্রিয় করতে চায়। একইভাবে সেলসফোর্সের প্রধান নির্বাহী মার্ক বেনিওফ জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে চার হাজার গ্রাহকসেবাকর্মী কমিয়েছে। তবে এআইয়ের অগ্রগতির বাস্তবতা নিয়েও দ্বিধা রয়েছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে অর্ধেক প্রতিষ্ঠান আবারও গ্রাহকসেবা খাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা থেকে সরে আসবে। তাই সতর্কবার্তাটি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।
অল্টম্যান সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ওপেনএআই পরিচালনার নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব তাঁকে গভীরভাবে ভাবায়। প্রতিদিন শতকোটি মানুষ তাঁদের তৈরি চ্যাটবট ব্যবহার করছেন—এ বাস্তবতা তার জন্য বাড়তি চাপের কারণ। তিনি বলেন, ‘আমি ভালোভাবে ঘুমাতে পারি না। প্রতিদিন শতকোটি মানুষ আমাদের মডেলের সঙ্গে কথা বলেন। এই বাস্তবতা আমাকে প্রচণ্ডভাবে দায়িত্বশীল করে তোলে। বড় নৈতিক সিদ্ধান্তে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও আমি খুব ভয় পাই না। বরং ছোট ছোট সিদ্ধান্তই বেশি দুশ্চিন্তার কারণ, কারণ এগুলো বাস্তব জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।’ [সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া]