রাতে বেশি জাগেন? জেনে নিন পরিণতি

মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম
মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম  © সংগৃহীত

মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। এর জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো রাত। কোন কাজ নেই, অথচ রাতে বিছানায় শুয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ফোন চাপাচাপি কিংবা ভিডিও দেখা অথবা রাত জেগে কাজ করা। ফলে রাতের সময়টুকু বিশ্রামের পরিবর্তে জেগে কেটে যায়।

অন্যদিকে, দিনের বেলা অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে সর্বদা লেগে থাকে ক্লান্তি ও অবসাদ। ফলে দেহে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এমনকি সুপ্তভাবে দানা বাঁধতে থাকে বিভিন্ন রোগব্যাধি। এ পর্যায়ে রাতে অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে দেহের উপর পড়া ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানব- 

রাতে অপর্যাপ্ত ঘুম মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ায়

যারা রাতে নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমান না, তারা অধিক মৃত্যু ঝুঁকি থাকেন। কেননা একাধিক গবেষণার তথ্যমতে, ঘুমের হার্টের স্বাস্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে। তাই দৈনিক পর্যাপ্ত তথা অন্তত ৭-৮ ঘন্টা না ঘুমালে ধীরে ধীরে হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে হার্টে ব্লকসহ বিভিন্ন জটিলতায় মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
 
ক্লান্তি ও কাজে ব্যাঘাত 

রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে, দিনের বেলায় সেটা পূর্ণতা পায় না। ফলে ক্লান্তিবোধ হয়। তাছাড়া সকালে অধিক সময় ঘুমানোর কারণে কাজের ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া কাজে মনোযোগের অভাব দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুন: চোখের যত্নে করণীয়

দীর্ঘস্থায়ী রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি

রাতে অপর্যাপ্ত ঘুম কিংবা নির্ধারিত সময়ে না ঘুমানোর অভ্যাস দেহে বয়ে আনতে পারে ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা হার্ট অ্যাটাকের মতো জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী রোগ। ফলে অকাল মৃত্যুুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ত্বকের ক্ষতি 

রাতে অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে চোখ ফোলা এবং ত্বকের লোম দেখা দিতে পারে। তাছাড়া চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল, মুখের উপর সূক্ষ্ম রেখা এবং ত্বকের নিচে দাগ স্থায়ী হয়ে যেতে পারে। যার ফলে ত্বকের ক্ষতি হয়।

ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ে

অপর্যাপ্ত ঘুম ওজন বৃদ্ধিজনিত ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, সাত ঘণ্টার কম ঘুমানো ব্যক্তিদের দেহ স্থূল হওয়ার সম্ভাবনা ৩০% বেশি। কেননা পর্যাপ্ত ঘুম দেহে স্বাস্থ্যকর ক্ষুধা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু ঘুমের ব্যত্বয় ঘটলে দেহে ঘেরলিন হরমোনের উৎপাদন বাড়ে, যা ক্ষুধাকে উদ্দীপিত করে ও লেপটিনের উৎপাদন হ্রাস করে। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত স্থূলতার দিকে পরিচালিত করতে পারে। 

যৌন জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে

অপর্যাপ্ত ঘুম যৌন জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। 
মানসম্পন্ন ঘুমের অভাবে ভুগছেন এমন নারী ও পুরুষ উভয়ের উপর পরীক্ষা চালিয়ে জানা গেছে, যারা পর্যাপ্ত ঘুমান না, তাদের দেহে সেক্স হরমোন কম উৎপাদিত হয়েছিলো। তাছাড়া কম ঘুম যৌন মিলনের ইচ্ছা সীমিত  করে।

কর্মদক্ষতা কম ও হতাশা বৃদ্ধি 

অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে মন অনেক সময় বিষন্ন থাকে। ফলে দিনের বেলায় কাজে তেমন মনোযোগ হয় না।
এমনকি জিনিস সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার ক্ষমতাকে সীমিত করে। ফলে যুক্তিযুক্ত ও কার্যকারী সিদ্ধান্ত নিতে  অসুবিধা হয়। তাছাড়া রাত জাগার ফলে দুশ্চিন্তা মাথায় বেশি ভর করে এবং হতাশাজনক নোডগুলি তখন ট্রিগার করে, ফলে হতাশা বৃদ্ধি পায়। 

স্মৃতিশক্তি হ্রাস

মস্তিষ্কে স্মৃতি সংরক্ষণের অন্যতম অঙ্গ। মস্তিষ্কের কার্যকলাপের সময় স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিগুলি পরবর্তী পুনরুদ্ধারের জন্য নিওকর্টেক্স এবং হিপ্পোক্যাম্পাসে সংরক্ষিত হয়। কিন্তু নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম না হলে এই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়না। তাই স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে।

রাতে ঘুমের সমস্যা প্রতিরোধে উপায়

★ রাতে সময়মতো ঘুমানোর জন্য দ্রুত সব কাজ শেষ করা

★ ঘুমানোর পূর্বে সকল ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।

★ দিনের বেলা সীমিত ঘুমানো।

★ ঘুমানোর মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করা।

★ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা এবং রাতে বেশি তেলযুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকা।

★ শুয়ে পড়ার পর মস্তিস্ক শান্ত রাখা এবং অধ্যাধিক চিন্তা করা থেকে বিরত থাকা। 

★ দিনের বেলা শারীরিক পরিশ্রম করা কিংবা নিয়মিত শরীরচর্চা করা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence