শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে প্রকৃত উদ্যোগ এখনও নেই
*বিভিন্ন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টেও এ বিষয়ে সুপারিশ ছিল *অনেকগুলো সরকারও শিক্ষকদের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দিলেও এটি বাস্তবায়িত হয়নি *মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের মানসম্পন্ন বেতন-ভাতা দরকার বলে মনে করে শিক্ষাবিদরা
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৪ PM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৮ PM
বিভিন্ন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ থাকলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সমাজ একটি অভিন্ন সরকারি কাঠামোর অধীনে বেতন-ভাতা পেয়ে আসছেন। সেখানে শিক্ষকতা পেশার বিশেষ বৈশিষ্ট্য, পেশাগত দায়িত্ব এবং সামাজিক মর্যাদার বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে গেছে। এ জন্য আমলাদের অনীহাকেও দায়ী করছেন তারা।
১৯৭৪ সালের ড. কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন থেকে শুরু করে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য পৃথক, সম্মানজনক এবং প্রণোদনামূলক বেতন কাঠামো প্রবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল। এমনকি ২০১৫ সালে অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল ঘোষণার সময়ও এ নিয়ে জোর আলোচনা হয়। তবে আজও কোনও সরকারই এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ের শিক্ষকরা মনে করেন, বর্তমান বেতন কাঠামো তাদের পেশাগত দায়িত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। একজন শিক্ষকের কাছে যেমন মানসম্মত পাঠদান প্রত্যাশা করা হয়, তেমনি সেই মান নিশ্চিত করতে তাকে প্রস্তুতি, পাঠ পরিকল্পনা, ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়নের মতো পরিশ্রমসাধ্য কাজ করতে হয়। অথচ এর বিপরীতে যে বেতন-ভাতা দেওয়া হয়, তা দেশের বাজার বাস্তবতায় পর্যাপ্ত মনে হয় না সিংহভাগেরই।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিতে আন্দোলন করেছেন, বিষয়টি তাদের জানা আছে। তবে দেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় বিষয়টি বাস্তবায়ন করা সহজ নয়। এ ছাড়া প্রশ্ন উঠেছে—স্বতন্ত্র কাঠামো করলে কার জন্য করা হবে? কারণ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, গবেষণার অবদান এবং পাঠদানের ধরণে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে।
ভারতে প্রবেশ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতি মাসে ৫৭ হাজার ৭০০ রুপি থেকে ১ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ রুপি বেতন প্রাপ্ত হন। মালয়েশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকদের বেতন প্রতি মাসে ৩ হাজার রিংগিত থেকে ১২ হাজার রিংগিত পর্যন্ত। সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশে বেতন আরও বেশি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি মাসে এসজিডি ৪ হাজার থেকে এসজিডি ১৪ হাজার (প্রায় ২ হাজার ৯৫০ ডলার থেকে ১০ হাজার ৩০০ ডলার) বেতন প্রদান করা হয়।
শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যারা পালন করেন, সেই শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নিয়ে এই ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা হতাশাজনক। একটি সম্মানজনক, উৎসাহব্যঞ্জক ও বাস্তবভিত্তিক বেতন কাঠামো ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়নও সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) নুরুন আখতার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো নিয়ে আন্দোলন হলেও আমাদের কাছে এখনো এ বিষয়ে কোনো আবেদন জমা হয়নি। আবেদন জমা না হলে আমরা স্বপ্রনোদিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উল্লেখযোগ্যভাবে উচ্চবেতন পান। তবে বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন খুবই সামান্য। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে কম বেতন পান বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। অঙ্কের হিসেবে যা মাসিক ১৭০ ডলার। মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন আরও কম। বাংলাদেশে মাধ্যমিকে প্রবেশ পর্যায়ে সহকারী শিক্ষকরা ১০৩ ডলার বেতন পান। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদে চাকরি শুরু করা শিক্ষকরা ২৮৯ ডলার বেতন পান।
আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শহীদ আবু সাঈদের নামসহ ১৯ ভুল
যেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে মালদ্বীপের শিক্ষকরা বাংলাদেশের শিক্ষকদের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ ৯৫৩ ডলার বেতন পান। নেপালে সহকারী শিক্ষকদের বেতন ৪৬৭, ভুটানে ৩৪১, শ্রীলঙ্কায় ২৫০, ভারতে ২৮৪, পাকিস্তানে ২০৬ ডলার। আর মিয়ানমারে ১৮৯ ডলার পান এ পর্যায়ের শিক্ষকরা।
ভারতে প্রবেশ পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতি মাসে ৫৭ হাজার ৭০০ রুপি থেকে ১ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ রুপি বেতন প্রাপ্ত হন। মালয়েশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষকদের বেতন প্রতি মাসে ৩ হাজার রিংগিত থেকে ১২ হাজার রিংগিত পর্যন্ত। সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত দেশে বেতন আরও বেশি। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি মাসে এসজিডি ৪ হাজার থেকে এসজিডি ১৪ হাজার (প্রায় ২ হাজার ৯৫০ ডলার থেকে ১০ হাজার ৩০০ ডলার) বেতন প্রদান করা হয়।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তুলনামূলকভাবে কম বেতনের ফলে যোগ্যদের আকর্ষণ ধরে রাখার ক্ষমতা ও গবেষণায় মনোনিবেশকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করে। অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি শিক্ষকতার পরিবর্তে বিদেশে কিংবা বেসরকারি খাতে তাদের কর্মসংস্থান বেছে নিতে বাধ্য হন। যা দেশের শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমানকে প্রভাবিত করে। মেধাবীরা ক্যারিয়ার গড়তে চান না শিক্ষকতায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাজের প্রকৃতি অন্যান্য পাবলিক সেক্টরের ভূমিকা থেকে আলাদা। শিক্ষকরা ক্রমাগত পেশাগত উন্নয়ন, গবেষণা ও পরামর্শ প্রদান এবং শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার সঙ্গে জড়িত, যার জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিবেশ, অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ও মানসিক প্রশান্তি, যা বর্তমান বেতন স্কেলে পর্যাপ্তভাবে স্বীকৃত এবং বাস্তবসম্মত নয়। একটি বিশেষ বেতন স্কেল শিক্ষকদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য প্রণোদনা প্রদান করতে তীব্রভাবে উৎসাহিত করতে পারে, যা জাতীয় উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘নানা কারণে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা যায়নি। এর মধ্যে অন্যতম হলো-আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আমলারা শিক্ষকতা পেশাকে গুরুত্ব দিতে চায় না। তাদের এ মনোভাব বদলাতে হবে। না হলে শিক্ষকদের দুর্দশা দূর হবে না।’ -অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, উপাচার্য, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
তাদের মতে, আর্থিক স্বচ্ছলতা শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা ও চাকরির সন্তুষ্টিকে সরাসরি প্রভাবিত করে। আর্থিক স্থিতিশীলতা শিক্ষাবিদদের তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব-শিক্ষা ও গবেষণায় উৎসাহিত করে। যার একমাত্র বেনিফিশিয়ারি রাষ্ট্র। যখন শিক্ষকদের পর্যাপ্ত সম্মানী দেওয়া হয়, সেটি তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতিতে অধিক নিবেদিত, উৎসাহী ও উদ্ভাবনী হওয়ার সম্ভাবনাকে ত্বরান্বিত করে। ফলস্বরূপ, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ইতিবাচক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে পারস্পরিক, সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে শিক্ষাব্যবস্থাকে কার্যকর করে গড়ে তোলে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম তালুকদার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকদের মানসিক নিশ্চয়তা ও পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধি জরুরি। স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো না থাকলে এই পেশায় মেধাবীদের আগ্রহ কমে যাবে, ফলে শিক্ষার মানেও দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে। যে দেশে ব্যাংক কর্মকর্তা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা চিকিৎসকদের পেশা আলাদাভাবে মর্যাদা পায় ও বেতন কাঠামো থাকে, সেখানে শিক্ষকের জন্য তেমন স্বীকৃতি না থাকা দুর্ভাগ্যজনক।
ঢাবির এ অধ্যাপক আরও বলেন, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো খুবই দরকার। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের একজন অধ্যাপকের বেতন স্কেল ৭৮ হাজার টাকা। তিনি যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সুবিধা নেন তাহলে তিনি এই বেতন পেয়ে থাকেন। এর মধ্যে অনেককিছু কাটা হয়। সবমিলিয়ে মাসে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা থাকে। বর্তমান বাজারমূল্যে এই অর্থ দিয়ে চলা কঠিন।
স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হলে সব পর্যায়ের শিক্ষকদের ক্ষেত্রেই করতে হবে উল্লেখ করে ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, সব শিক্ষকের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল না হলে বৈষম্য তৈরি করা হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতাসহ সবকিছু বিবেচনা করে তার বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ঠিকমতে হলে মেধাবীরা অতিরিক্ত হারে বিসিএস এবং বিদেশমুখী হতেন না। শিক্ষকরা বাড়ি-গাড়ি কিছুই পায় না। এর বিকল্প কী আছে সেটি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কী দিলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। তা না হলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এগোবে না।
২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছিল, ‘শিক্ষকদের পেশাকে সম্মানজনক ও আকর্ষণীয় করে তুলতে তাঁদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।’ তবে সেই নীতি তৈরির ১৫ বছর পার হলেও বাস্তবায়ন হয়নি প্রতিশ্রুতিটি।
আরও পড়ুন: ৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা আজ, তিন হাজার পদে প্রার্থী ৪১০২৫
শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষক নেতাদের মতে, স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো থাকলে—শিক্ষকের পেশাগত মর্যাদা বাড়বে, মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহ দেখাবে। মেধাবীদের শিক্ষকতায় প্রবেশের মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত হবে। একইসঙ্গে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও ন্যায্য বেতন-ভাতা পাবেন।
শিক্ষকদের বেতন কম হওয়ায় মেধাবীরা এ পেশায় আসছে না জানিয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান, ভূটান, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের শিক্ষকদের বেতন বাংলাদেশের শিক্ষকদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি না করা হলে শিক্ষার উন্নয়ন হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানা কারণে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা যায়নি। এর মধ্যে অন্যতম হলো-আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। আমলারা শিক্ষকতা পেশাকে গুরুত্ব দিতে চায় না। তাদের এ মনোভাব বদলাতে হবে। না হলে শিক্ষকদের দুর্দশা দূর হবে না।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলাদেশে প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন অনেক কম। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর দিকে তাকালে পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো না হলে তারা মানসিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারবেন না। মানসিক দুশ্চিন্তা নিয়ে একজন শিক্ষক কখনোই শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ পাঠদান দিতে পারবেন না। তাই শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো খুব জরুরি।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অনেকগুলো কমিশন করলেও শিক্ষা কমিশন গঠন করেনি। অথচ শিক্ষা কমিশনই সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানান তিনি।
বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা বলে প্রতিটি সরকার নানা প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু শিক্ষক পেশাকে মর্যাদাবান করতে মৌলিক যে পদক্ষেপ, স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো—সেই সিদ্ধান্তই বারবার উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। শিক্ষকদের দাবি এখন—‘সম্মান চাই, সহানুভূতি নয়’, এর ভিত্তি হোক একটি আলাদা ও যৌক্তিক বেতন কাঠামো।