উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে চবি শিক্ষক সমিতির অবস্থান কর্মসূচি

অবস্থান কর্মসূচি
অবস্থান কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বাংলা ও আইন বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগে প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগ এবং দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে চলমান ব্যাপক অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে চবি শিক্ষক সমিতি। 

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই  অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।

এসময় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, চবি উপাচার্য অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে রাতের আঁধারে অবৈধ নিয়োগ বোর্ড পরিচালনা করে উপাচার্য পদে থাকার জন্য নৈতিক সমর্থন হারিয়েছে। তিনি এই পদকে কলঙ্কিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় হলো উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং প্রশাসন। তাদের পদত্যাগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলে আমরা শিক্ষক সমাজ বিশ্বাস করি। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

কর্মসূচিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক বলেন, আইন বিভাগে শিক্ষক প্রয়োজন নেই। তবুও উপাচার্য তার নিজের ক্ষমতার অবৈধ ব্যবহার করে আইন ও বাংলা বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বোর্ড আয়োজন করেছে। কিন্তু, নির্বাচন বোর্ডের সদস্য নির্দিষ্ট কয়েকজন প্রার্থীকে বাঁচাই করে নিজে গাড়িতে উঠিয়ে অজানা স্থানে বোর্ড পরিচালনা করার জন্য নিয়ে যায়। এবং নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করে। এটা চরম লজ্জাজনক ব্যাপার। এসব অতিরিক্ত শিক্ষকরা কি আপনাদেরকে পড়াবেন?

আরও পড়ুন: ঢাবি ভর্তির অনলাইন আবেদন শুরু, প্রক্রিয়া পাঁচ ধাপে

তিনি আরও বলেন, এখন নির্বাচনের সময়। আমাদের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। কিন্তু, চবি উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের লাগামহীন নিয়োগ বাণিজ্য, প্রশাসনের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আজ আমাদের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাদ দিয়ে এখানে দাঁড়াতে হয়েছে। আমরা এ প্রশাসনের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন করবো।

কর্মসূচিকে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড.  সেকান্দর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে আইন করেছে। বিভাগের একাডেমিক কমিটি ও পরিকল্পনা কমিটি এই আইনের অংশ। আজ আমরা ক্লাসে থাকার কথা। আমাদের দাবি বঙ্গবন্ধুর দেওয়া আইনের অধীনে চলবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে সুষ্ঠু পথে পরিচালনার জন্য আমাদের এই কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আযম, লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী এস. এম. খসরুল আলম কুদ্দুসী, আইন বিভাগের অধ্যাপক এ.বি.এম. আবু নোমান, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা খালেদা (আঁখি) এবং ওশানোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক।

এছাড়া কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিনসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তনিমা সুলতানাসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। 


সর্বশেষ সংবাদ