স্বল্প আলোয় ক্যাপসিকাম চাষে খুবি শিক্ষার্থীর সাফল্য

খুবি শিক্ষার্থী
খুবি শিক্ষার্থী   © টিডিসি ফটো

গবেষণায় স্বল্প আলোয় ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ চাষে সাফল্য পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থী মো. সোহেল রানা। খুবির এগ্রো-টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নানের তত্ত্বাবধানে জার্মপ্লাজম সেন্টারে এ গবেষণা করা হয়।

এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল গবেষণায় লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, বেগুনি ক্যাপসিকাম নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি স্বল্প রৌদ্র-আলোতে মালচিং শিট ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব উপায়ে ক্যাপসিকাম চাষ করেন।

গবেষণায় দেখা যায়, ছায়াযুক্ত স্থানে ক্যাপসিকাম চাষ করা হলেও প্রতিটি গাছে প্রায় ১০-১৫টি ও সর্বোচ্চ ২০টি ক্যাপসিকাম ধরেছে ও প্রতিটি ক্যাপসিকামের ওজন প্রায় ৭০-২০০ গ্রাম। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ৭০০-৯০০ গ্রাম পাওয়া গেছে।

এ গবেষণার উদ্দেশ্যের ব্যাপারে গবেষক জানান, ক্যাপসিকাম বিদেশি সবজি হওয়ায় বড় বড় হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং দাম অন্য সবজির তুলনায় অনেক বেশি। এর বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০-৩০০ টাকা এবং প্রতিটি গাছে ৩০-৪০ টাকা খরচ করে ১৫০-২০০ টাকা আয় করা সম্ভব। এটি চাষ করলে কৃষকেরা স্বাবলম্বী হবে ও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে।

ক্যাপসিকাম চাষে সবচেয়ে বড় বাধা হল বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ, বিশেষ করে এফিড, থ্রিপস, সাদা মাছি। এ জন্য চারা লাগানোর পরের দিনই ইমিডাক্লোরোফিড বা এসিটামপিড গ্রুপের কিটনাশক যেমন বিল্ডার বা তুন্দ্রা ব্যবহার করতে হয়।

আরও পড়ুন : বাড়ছে বিসিএস প্রীতি, বদলে যাচ্ছে পেশা

জমি তৈরির সময় রাসায়নিক সারের সাথে কার্বফুরান গ্রুপের ফুরাডান ব্যবহার করলে গাছে ব্যাকটেরিয়াল উইল্ট হয় না। ক্যাপসিকামের প্রথম ফুল অবশ্যই ঝরে পড়ে এবং ফুল ঝরে পরা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্লান্ট গ্রোথ রেগুলেটর ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া চিলি লিফ কার্ল ভাইরাস ক্যাপসিকামের জন্য খুবই ক্ষতিকর। গাছ ভাইরাস আক্রান্ত হলে তা তুলে জমি থেকে দুরে মাটি চাপা বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে হয়। এ ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষায় এর ভেক্টর দমন করতে হয়। সাধারণত সাদা মাছি, এফিড বা জাব পোকা, থ্রিপস এই ভাইরাসের ভেক্টর হিসেবে কাজ করে।

এফিড ও থ্রিপস দমনে নিম ওয়েল ও কেওলিন (অরগানিক) ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে ভালো মানের কেওলিন সচরাচর পাওয়া যায় না। সাদা মাছি ও এফিড দমনে ল্যাম্বডা সাইহেলোথ্রিন ও যায়ামেথোক্সেম গ্রুপের কীটনাশক ক্যারেট ও অলটিমো প্লাস বা এসিটামিপ্রিড গ্রুপের তুন্দ্রা ব্যবহার করা হয়। থ্রিপস দমনে স্পিনোসীড গ্রুপের ক্যারেট/ম্যনসার/এবেরন।

মাকড়ের আক্রমণ হলে পাতা নিচের দিকে কুচকে যায় এবং ভাইরাসের আক্রমণে পাতা উপরের দিকে কুচকে যায়। মাকড় দমনে ভার্টিমেক/ইন্ট্রাপিড,অ্যাবেমকটিন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতিবার কীটনাশক স্প্রে করার সময় ছত্রাকনাশক হিসেবে এন্ট্রাকল বা কার্বেন্ডাজিম, মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক দিতে হয়। পোকামাকড় কীটনাশক প্রতিরোধী হওয়ায় স্প্রে করার সময় কীটনাশক পরিবর্তন করতে হয়।

ক্যাপসিকাম চাষে ভালো ফলনের পূর্বশর্ত জাত নির্বাচন। মানসম্মত ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ১৬-২১° সেলসিয়াস। সাধারণত নভেম্বর মাসে চারা রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

সবুজ ক্যাপসিকাম ৯০-১০০ দিনের মধ্যে তোলার উপযোগী হয় যেখানে লাল, হলুদ, বেগুনী, কমলা ১২৫-১৩৫ দিন সময় লাগে। সাধারণত সারি থেকে সারি এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪৫ সে. মি. রাখা হয়। ক্যাপসিকাম বৃষ্টি বা উত্তাপ কোনটাই পছন্দ করে না। সবকিছু ঠিক থাকলে হেক্টর প্রতি ২০-২৫ টন ফলন পাওয়া যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence