বাবার জন্য হার্টের চিকিৎসক হতে চান মেডিকেল ভর্তিতে ২য় তানভীন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১০:২৭ AM , আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩৮ AM
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন মো. তানভিন আহমেদ। পরীক্ষায় ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৮৭ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। বড় হয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়ার ইচ্ছা তার। বাবা হার্টের রোগী হওয়ায় এই ইচ্ছা তার।
টাঙ্গাইলের পাহাড়কাঞ্চনপুরের বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তানভিন। কার বাবা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. শাহজাহান। মা পারভীন বেগম একজন গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তানভীন সবার বড়। তানভীনদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার তশরা গ্রামে। সাত বছর ধরে তানভীনের পরিবার সখীপুর উপজেলার নলুয়ার আড়ালিয়াপাড়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছেন।
জাতীয় মেধায় দ্বিতীয় হওয়ায় শুকরিয়া জানিয়ে তানভিন বলেন, যখন প্রথম বার ফলাফল দেখি তখন জাতীয় মেধায় দ্বিতীয়তে আমার নাম। তখন আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারিনি। দ্বিতীয় হবো সেটা আমি প্রত্যাশা করি। আল্টিমেটলি এটা হয়েছে। এজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা, মা, চাচাসহ কলেজের শিক্ষকদের অবদান অনেক বেশি।
তার বাবা হার্টের (হৃদ্রোগ) রোগী জানিয়ে তানভীন জানান, তিনি হার্টের চিকিৎসক হয়ে বাবার চিকিৎসা করতে চান। অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই।
নিয়মমাফিক পড়াশোনা করেছেন জানিয়ে তানভীন বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগে ঢাকা ও টাঙ্গাইলেও কোচিং করেছি। মফস্বলে থেকেও ভালো ফল করা যায়, এটা অন্তত প্রমাণ করেছি।
তানভীনের বাবা শাহজাহান বলেন, ২০১৪ সালে তিনি বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট হিসেবে ঢাকা থেকে অবসরে যান। ঢাকা শহরে ভাড়া বাসায় থেকে তাঁর সন্তানদের পড়াশোনা করানো সম্ভব নয় বলে তিনি চিন্তায় পড়ে যান। শাহজাহানের ছোট ভাই শামীম আহমেদ সখীপুরের পাহাড়কাঞ্চনপুর বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে চাকরি করেন। ওই ঘাঁটির ভেতরে বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি গ্রামে থাকায় ওই স্থানে বাসা ভাড়া কম। শামীম আহমেদের পরামর্শে ২০১৪ সালে পুরো পরিবার নিয়ে সখীপুরের নলুয়ার আড়ালিয়া পাড়া গ্রামে বাসা ভাড়া নেন তিনি। ওই বছর বিএএফ শাহীন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে তানভীন আহমেদ ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন ছোট ভাই তাহসীন আহমেদ। ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই এসএসসি ও এএইচসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন তানভীন আহমেদ।
ছেলের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলের যেন পড়াশোনা করে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে।
তানভীন খুব মেধাবী শিক্ষার্থী জানিয়ে পাহাড়কাঞ্চনপুর বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক প্রণব কুমার বলেন, এ বছর আমাদের কলেজ থেকে তানভীনসহ দুইজন মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। কলেজ থেকে তাদের শিগগিরই সংবর্ধনা দেওয়া হবে।