যমজ বোনের মেডিকেল জয়
ডাক্তার বাবার মেডিকেলেই পড়বেন মিহা, লিহা পড়বেন পাশের মেডিকেলে
- ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ AM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ AM
অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জমজ দুই বোন মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। তাদের মধ্যে ফাবিহা জামান মিহা ৮১.৭৫ নম্বর পেয়ে জাতীয় মেধায় ৮৭৩তম হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়বেন। আর লামিসা জামান লিহা ৭৫ নম্বর পেয়ে জাতীয় মেধায় ৪৬৭৫তম হয়ে পড়বেন নেত্রকোনা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছ।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে তাদের এই কৃতিত্বপূর্ণ অর্জনে পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। মেধাবী এই দুই বোন বর্তমানে বাউন্ডারি রোড ময়মনসিংহে বসবাস করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ভাটি সাভার গ্রামে। তাদের বাবা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম. কামরুজ্জামান মানিক। আর মা নাসিরাবাদ কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান তসলিমা বেগম লাভলী।
মিহা ও লিহা ময়মনসিংহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় মিহা ১২৪৭ নম্বর এবং লিহা ১২৪১ নম্বর, এইচএসসি-২০২৫ পরীক্ষায় মিহা ১১৯২ এবং লিহা ১১৮৫ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তারা দুই পরীক্ষাতেই মেধাবৃত্তি পান।
তাদের বাবা ডা. এম কামরুজ্জামান মানিক জানান, এ সাফল্য শুধু তাদের পরিবারের নয়, পুরো নান্দাইলবাসীর। তাদের এই অর্জন আশপাশের শিক্ষার্থীদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তারা ভবিষ্যতে মানবিক চিকিৎসক হয়ে দেশ ও দশের সেবা করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিজ পেশায় ব্যস্ত থাকতে হয়। মেয়েদের সাফল্যের পেছনে তাদের কঠোর পরিশ্রম ও তাদের শিক্ষক মায়ের দিকনির্দেশনা অনেক কাজে লেগেছে। তাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
আরও পড়ুন: দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে মেডিকেলে চান্স পেলেন ৪৪ শিক্ষার্থী
মিহা ও লিহার মা তসলিমা বেগম লাভলী মা বলেন, ‘মেয়েদের পরিশ্রমের সার্থকতা এসেছে, আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করি, তারা যেন তাদের মানবিক গুণগুলো আজীবন ধারণ করতে পারে। কারণ ডাক্তারি পেশায় মানবতা খুব প্রয়োজনীয়।’
মিহা তার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। মানবিক ডাক্তার হয়ে পরিবার, দেশ ও মানুষের সেবা করতে চাই’। আর লিহার ভাষ্য, ‘আলহামদুলিল্লাহ। ডাক্তার হয়ে বাবার মতো মানুষের সেবা করতে চাই।’
মিহা ও লিহার এই অসাধারণ অর্জনে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মোমেনশাহীর অধ্যক্ষ লে. কর্নেল আবু হায়াত মো. রীশাদ মোরশেদ বলেন, ‘মিহা ও লিহা দুজনই একই পরিবারের জমজ বোন হয়েও এই বছর মেডিকেেলে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাস্থান অর্জন করেছে। এটি আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য এক অনন্য গৌরবের মুহূর্ত।’
অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি গভীর আনন্দ ও গর্ব অনুভব করছেন জানিয়ে বলেন, ‘তাদের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে, অধ্যবসায়, নিষ্ঠা ও সঠিক দিক নির্দেশনা থাকলে অসাধ্য কিছুই নয়। আমি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।’