বাংলাদেশ ব্যাংকের এডিতে প্রথম জান্নাতুল, শেষ থেকে রোল খুঁজতে গিয়ে দেখেন প্রথমটাই তার

জান্নাতুল ফেরদৌস
জান্নাতুল ফেরদৌস  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক (এডি) পদে ২০২৫ ব্যাচের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রথম হয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোছা. জান্নাতুল ফেরদৌস। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চাকরির প্রস্তুতি শুরু করেন তিনি। তবে ভাবতে পারেননি এডি পদে প্রথম স্থান অর্জন করবেন। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর শেষ থেকে রোল খুঁজতে গিয়ে দেখেন প্রথম রোলটাই তার। 

জান্নাতুলের বাড়ি কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার কলেজপাড়া গ্রামে। রাজিবপুর পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে  জিপিএ–৫ পেয়ে এসএসসি ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে  জিপিএ–৫ এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েট প্রসেসিং বিভাগে। সেখান থেকে ২০১৮ সালে সিজিপিএ-৩.৮৭ পেয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে প্রথম হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে জান্নাতুল বলেন,  চূড়ান্ত ফলাফলের তালিকায় প্রথম রোলটাই যে নিজের হবে, সেটা কখনোই ভাবিনি। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে শুনে ভেবেছি, শেষ থেকে রোলটা খুঁজে দেখি। প্রথম রোলটাই নিজের দেখে অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে ছিলাম। বারবার প্রবেশপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখছিলাম। অন্য রকম এক অনুভূতি কাজ করেছে, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

তিনি আরও বলেন, এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি পদে ২০২২ ও ২০২৩ সালে পরপর দুবার প্রিলিমিনারি ও লিখিত পাস করে ভাইভায় অংশগ্রহণ করি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুবারই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার (সাধারণ) পদে ভাইভায় অংশগ্রহণ করি ও চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়ে যোগ দিই। 

এডি পদে পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এগিয়েছি। প্রিলির জন্য আগের বছরগুলোর প্রশ্ন সমাধানের পাশাপাশি বাসায় মডেল টেস্ট দিয়ে প্রস্তুতি যাচাই করেছি। লিখিত পরীক্ষার জন্য আমার আগের ভুলগুলো সময় নিয়ে খুঁজে বের করেছি। ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বাংলা ও ইংরেজিতে নিয়মিত লিখেছি। অনলাইনে আইইএলটিএসের আর্গুমেন্টগুলো দেখে পরীক্ষায় কীভাবে উপস্থাপন করব, সে বিষয়ে ধারণা নিয়েছি। দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সব গুছিয়ে খাতায় উপস্থাপন করা বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে বাসায় অনুশীলন করেছি। আমার স্বামী প্রস্তুতির সার্বিক দিকনির্দেশনা দিয়ে সাহায্য করেছেন।

ভবিষ্যতে যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি হতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী থাকবে জানতে চাইলে জান্নাতুল বলেন, প্রিলিমিনারিতে ভালো করার জন্য মডেল টেস্ট দিয়ে নিজেকে যাচাই করতে হবে। নিজের দুর্বল দিকগুলোয় বেশি সময় দিতে হবে। দ্রুত গণিত সমাধানের জন্য নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ে ভালো করার জন্য নিয়মিত লেখার বিকল্প নেই। লিখিত পরীক্ষায় বরাদ্দকৃত দুই ঘণ্টা সময়ের ব্যবস্থাপনা খুব সতর্কভাবে করতে হবে। সম্পূর্ণ নিজের মতো করেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তবে সফলতা সব সময় অল্পতেই আসে না, ব্যর্থ হলেও নিজের ভুলগুলো খুঁজে বের করে শুধরে নিয়ে আবার চেষ্টা করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ