কাপড়ে শখের আঁকাআঁকি এখন আয়ের মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নোশীনের

পোশাকে হ্যান্ডপেইন্টিং করছেন নোশীন
পোশাকে হ্যান্ডপেইন্টিং করছেন নোশীন  © টিডিসি ফটো

পোশাকে রংবেরংয়ের বাহারি ডিজাইনের মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলতে তরুণ-তরুণীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হ্যান্ডপেইন্টিং। চাহিদা বাড়ায় অনেকেই নিজেদের পেশা হিসেবেও বেঁছে নিচ্ছেন হ্যান্ডপেইন্টিং। এমনকি পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করতে অনেক শিক্ষার্থীও যুক্ত হচ্ছেন এ কাজে।

এমনই একজন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর শিক্ষার্থী নোশীন মাইশা। করোনাকালীন সময়ে যখন ঘরবন্দী সময় কাটছিল, তখনই একদিন সিদ্ধান্ত নেন এই অবসর সময় কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী হবেন তিনি। প্রথমে পাটের বিভিন্ন পণ্য তৈরী শুরু করলেও আঁকাআঁকিতে তীব্র আগ্রহের কারণে পরবর্তীতে শুরু করেন পোশাকে হ্যান্ডপেইন্টিং। 

খুব বেশি দিনের পথচলা না হলেও নিজের ভালবাসা ও যত্নের মাধ্যমে প্রত্যেকটি পোশাক মনোমুগ্ধকর করে ফুটিয়ে তোলায় হ্যান্ডপেইন্টিংয়ে এখন একটি পরিচিত নাম নোশীন ও তার প্লাটফর্ম তরুলতা। আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিত মানুষজনের গন্ডি পেরিয়ে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে কাজের অনুরোধ। মাঝেমধ্যে অর্ডারের আধিক্যের কারণে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। সর্বশেষ শুধুমাত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে তার কাছে ৫০ এর বেশি পাঞ্জাবি ও ডজনখানেক শাড়ির অর্ডার এসেছে।

তবে তরুলতা নিয়ে নোশীনের শুরুর গল্পটা এতটাও মসৃণ ছিল না। হ্যান্ডপেন্টিংয়ে তার কোনো প্রশিক্ষণ ছিলো না। ছোটবেলায়ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আঁকাআঁকি শেখা হয়নি। শুধুমাত্র নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি, পরিশ্রম ও শখের জায়গা থেকে কাজ কাজ করতে করতে আজ এ অবস্থানে নোশীন। আর এক্ষেত্রে তার অনুপ্রেরণা ছিল পরিবারের সমর্থন।

বর্তমানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে পরিবার থেকে দূরে সিরাজগঞ্জে থাকছেন নোশীন। তবে দূরে নেই হ্যান্ডপেইন্টিং থেকে। ক্লাস, এসাইনমেন্ট, পরীক্ষা সামলেই প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে।

শাড়ি, পাঞ্জাবি ও মাস্কেই মূলত হ্যান্ডপেইন্টিং করেন নোশীন। আয়ের বিষয়ে নোশীন বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে স্বাবলম্বী হতে চাই। তাই আয়টাকে মুখ্য হিসেবে দেখছি না। গড়ে প্রতিটি পাঞ্জাবিতে কাজ করতে সময় লাগে এক থেকে দু’ঘণ্টা। গ্রাহকদেরকে এজন্য কাজের পরিমাণ কম বেশি অনুসারে দিতে হয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। পাঞ্জাবি কেনা ও রংসহ অন্যান্য খরচ শেষে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা লাভ থাকে আমার। এছাড়াও একেকটি শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে ২-৩ দিন এবং গ্রাহকদের থেকে তার মূল্য নেই ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা।
 
তিনি আরও বলেন, পাঞ্জাবি বাইরে থেকে কিনে তাতে পেইন্ট করি। তাই আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ভালো মানের কাপড় দেখে কিনতে, যেন গ্রাহকরা তা দীর্ঘ সময় ব্যবহার করতে পারেন। যার কারণে হ্যান্ডপেইন শেষে শাড়ি-পাঞ্জাবির দাম অন্যদের তুলনায় কিছুটা বেশি হয়। যেটি গ্রাহকদের বুঝিয়ে বলতে অনেকটা সময় লাগে। তবে শাড়ি বা পাঞ্জাবী হাতে পেয়ে কাপড়ের মান ও আমার হ্যান্ডপেইন্টিং দেখে এখনো কেউ বলেনি আমি বেশি নিয়েছি।

নোশীনের ইচ্ছা হ্যান্ডপেইন্টিং নিয়ে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলবেন। আর্থিক সহায়তা পেলে নিজের ব্যবসাকে আরও বড় করতে চান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence