মেয়াদহীন চবি ছাত্রলীগ, আড়াই বছরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি

চবি ছাত্রলীগ
চবি ছাত্রলীগ  © টিডিসি ফটো

আড়াই বছর ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। মেয়াদ শেষ হলেও কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বারবার সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। পদপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, পদ আঁকড়ে ধরে রাখতেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করছেন না সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শীর্ষ নেতারা বলেছেন, কমিটির কাজ চলছে। দ্রুতই প্রকাশ করা হবে।

২০১৯ সালের ১৩ জুলাই রেজাউল হব রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক বছর মেয়াদী এই কমিটি বর্তমানে আড়াই বছর পার করেছে। এতো লম্বা সময়েও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ ২৫ জানুয়ারির মধ্যে কমিটি প্রস্তুত করে কেন্দ্রে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি।

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আরেকটির নেতৃত্ব দেন সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এই দুই ধারায় পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিও। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল নওফেলের অনুসারী ও সাধারণ সম্পাদক টিপু নাছিরের অনুসারী।

আরও পড়ুন- পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে বিক্ষুব্ধ চবি ছাত্রলীগ

দীর্ঘদিন ধরে শিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে অবস্থান শক্ত করে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে বর্তমানে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সংগঠনের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। গত আড়াই বছরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে অন্তত অর্ধ শতাধিকবার সংঘর্ষে জড়িছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড়শ নেতাকর্মী। এ মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হলে সংগঠনের মধ্যে অস্থিরতা আরও বাড়বে বলে জানান নেতাকর্মীরা। বারবার সংঘর্ষে জড়ানোর ঘটনায় ছাত্রলীগ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। ছাত্রলীগের সংর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জন নেতাকর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপ গ্রুপ আছে ১১টি। সবগুলো গ্রুপই বগিভিত্তিক। এদের মধ্যে দুইটি গ্রুপ (বিজয় ও সিএফসি) ছাড়া বাকীগুলো আ জ ম নাছিরের অনুসারী। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ২০১৬ সালে বগিভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেটি মানছেন না শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

গত ১৩ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু এবং উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক শেখ নাজমুল বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আসলে তাদের মূল ফটকে আটকে দেন পদপ্রত্যাশীরা। পরে নেতাদের আশ্বাসে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবশ করতে দেয়া হয়। তখন ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়ার কথা বলেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ উপলক্ষ্যে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জীবনবৃত্তান্তও জমা নেন তারা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রে জমা দেননি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আরও পড়ুন- ধর্মঘট প্রত্যাহার করল চবি ছাত্রলীগ

পদপ্রত্যাশীরা জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় পদপ্রত্যাশীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। ক্যাম্পাসে ২০১৫-২০১৬ সেশনের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে সিনিয়র এখন। কিন্তু নিয়মিত কমিটি না হওয়ায় ২০০৯-২০১০ সেশনের নেতাকর্মীরা এখনো পদহীন রয়েছেন। কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বারবার সংঘাতে জড়াচ্ছে নেতাকর্মীরা। অনেকে হতাশ হয়ে চাঁদাবাজি ও নেশাগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন পদপ্রত্যাশীরা।

এ বিষয়ে সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে ২০১ সদস্যের। আমার পক্ষের কমিটি নিয়ে প্রস্তুত আছি। কিন্তু অন্য পক্ষ এখনো প্রস্তুত না। তাই কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, আমাদের অনেকগুলো উপগ্রুপ ক্যাম্পাসে। আমরা চাইলেই সবকিছু করে ফেলতে পারি না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence