লটারিতে ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা, ক্ষোভ জানিয়ে লিখিত পরীক্ষার দাবি অভিভাবকদের

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমের অপেক্ষারত অভিভাবকরা
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা ও আইসিটি) রুমের অপেক্ষারত অভিভাবকরা  © সংগৃহীত

চাঁদপুরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লটারী পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। লটারিতে ভর্তি হতে না পারায় সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমুন নাহারের অফিস কক্ষের সামনে ভিড় করেন একাধিক বিদ্যালয়ে আবেদন করা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

চাঁদপুর সদরের বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লটারিতে সুযোগ না পাওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, আমরা বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি। লটারিতে আমাদের নাম মেরিট লিস্টে থাকলেও আমরা ভর্তি হতে পারছি না। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেনের কাছে গেলে তিনি আমাদের এডিসি শিক্ষা স্যারের কাছে যেতে বলেন। সেই কারণেই আমরা এখানে এসেছি।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা লটারী পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম চান না। তাদের দাবি, আগের মতো লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা হোক। শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, লটারী পদ্ধতিতে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভালো স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। কেবল ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে ভর্তি হওয়া আমাদের জন্য হতাশাজনক।

লটারী পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, এতে মেধার কোনো সঠিক মূল্যায়ন হয় না।

এদিকে অভিভাবকরাও একই সুরে অভিযোগ তুলে বলেন, এই লটারী পদ্ধতির কারণে আমাদের সন্তানদের ভর্তি নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। প্রতি বছর একটি বাজে পদ্ধতির মাধ্যমে ভর্তি করানো হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।

তারা আরও বলেন, একবার স্কুলে যেতে হয়, আবার অনলাইনে আবেদন করতে দোকানে, আবার স্কুলে, আবার ডিসি অফিসে—এইভাবে আমাদের এক প্রকার হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা লটারী পদ্ধতি চাই না, আমরা চাই লিখিত পরীক্ষা। এতে অন্তত শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই হবে।

এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, বর্তমানে ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক। সফটওয়্যারটি ঢাকা থেকে পরিচালিত হয়, আমাদের হাতে কিছুই নেই। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী একাধিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পায়। এরপর যেখানে সুযোগ পাবে, সেখানে ভর্তি হবে।

তিনি আরও জানান, যারা পছন্দের স্কুলে সুযোগ পায় না, তাদের জন্য অন্য বিদ্যালয়ে গিয়ে ভর্তির সুযোগ রয়েছে। তবে লটারী পদ্ধতি নিয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সরকার যেভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতে চায়, সেভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

চাঁদপুর জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমুন নাহার বলেন, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। এতে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকার নির্ধারিত ভর্তি কোটা রয়েছে ২২০ জন। এর বাইরে একজনকেও ভর্তি করার সুযোগ নেই। যারা ওয়েট লিস্টে রয়েছে, তারা নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি হবে অথবা অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের বা সরকারের করার মতো কিছু নেই।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!